বিএনপির সঙ্গে ছাত্রনেতাদের (বা গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে) কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝি কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
আজ রবিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছিলেন, সরকারের অংশ হিসেবে থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে আগামী নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ আরেকটি সরকারের প্রয়োজন হবে।
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা এবং সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টারা। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। এ নিয়ে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দূরত্ব দেখা দেয়। এর জের ধরেই আজ এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।আসিফ নজরুল তার পোস্টে বলেন, এটি গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও তাদের দোসরদের কতটা উৎসাহিত ও বেপরোয়া করে তুলতে পারে তার কিছুটা প্রমাণ আমরা গত কয়েক দিনে পেয়েছি। গত দুদিন ফেসবুক ছেয়ে গিয়েছিল ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা ও ছাত্রনেতাদের পলায়নের গুজবে। এই গুজবের উন্মত্ততায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নাশকতা করার চেষ্টা করেছে এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে।
আতঙ্কিত হয়ে তার কাছে দু-একজন ফোন করেছেন, ঘটনা কী জানার জন্য।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আমি যতটুকু জানি আর বিশ্বাস করি— বিএনপি ষড়যন্ত্র বা ১/১১ ধরনের কিছুতে আগ্রহী নয়। ছাত্রনেতারা সরকারে থাকা অবস্থায় কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করছেন না বা এতে যোগ দিতে যাচ্ছেন না। জুলাই ঘোষণাপত্র হবে একটি রাজনৈতিক দলিল এবং এটি প্রণয়নে গণ-অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মতামত আন্তরিকভাবে প্রতিফলনের ইচ্ছা ছাত্রনেতাদের রয়েছে। বিএনপি ও ছাত্রনেতারা এমনকি নির্বাচনকেন্দ্রিক বৃহত্তর সমঝোতার বিষয়েও অনাগ্রহী নন (এর ধরন ও ফর্মুলা আলোচনা সাপেক্ষে)। তাই বিরোধের কোনো কারণ নেই।ঐক্য ছাড়া বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘গণহত্যাকারীদের দল আওয়ামী লীগের হাতে রয়েছে লুটের লাখ লাখ কোটি টাকা, অনেক অন্ধ স্তাবক ও সুবিধাবাদী গোষ্ঠী, শক্তিশালী প্রচারণা নেটওয়ার্ক, তাদের পেছনে রয়েছে ক্ষমতাশালী ভিন্ন রাষ্ট্র। এদের রুখতে হলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে মনে রেখে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে ভিন্নমত থাকবে, কিন্তু তা বাংলাদেশের শত্রুদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক হয়ে ওঠার পর্যায়ে যেন না যায়।’