নৌকা প্রতীক না থাকলেও নির্বাচনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতি ঢুকে গেছে। চেয়ারম্যান পদে ‘রাজনৈতিক সমর্থন’ পাওয়া ব্যক্তির বাইরে কাউকে নিয়ে প্রচারণা চালালে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভোট ছাপিয়ে ফেলবে, এজেন্ট বের করে দিবে এমন হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে একটি মহল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে এমন অভিযোগ চেয়ারম্যান পদের বেশিরভাগ প্রার্থীর। ভোটের দিন বহিরাগতরা এসে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রভাব ফেলতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। সংশ্লিষ্টদেরকে এসব বিষয়টি অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, প্রভাবমুক্ত ভোটে হবে। এ বিষয়ে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বেলা সোয়া পাঁচটার দিকে মোবাইল ফোনে কথা হলে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আমি আগেই বলে দিয়েছি যে ভোটাররা তাদের পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। সে ব্যবস্থা হয়েছে কি-না সেটা আপনারা (সাংবাদিক) দেখতে পারেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, কোনো প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় যুবলীগ কিংবা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের পছন্দের প্রার্থী পছন্দ তাহলে তো আমার কিছু করার থাকে না। তবে তারা দলের কাউকে সমর্থন দিলো কি-না সেটা হলো কথা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নৌকা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়া হলেও যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সরাসরি মাঠে থাকায় বেশিরভাগ প্রার্থীর মধ্যে না শঙ্কা বিরাজ করছে। কেননা, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ইতিমধ্যেই একাধিক ইউনিয়নে পছন্দের প্রার্থীদেরকে সমর্থন দিয়ে দিয়েছে। কর্মী সভা, সংগঠন উদ্বোধন করার নাম করে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পছন্দের প্রার্থীকে ডেকে এনে সমর্থন দেওয়া হয়। ভোটের দিন তারা কেন্দ্রগুলোতে প্রভাব বিস্তার করেন কি-না এ নিয়ে যত শঙ্কা বিরাজ করছে।
মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক বলেন, ‘নৌকা প্রতীক না থাকলেও এক প্রার্থীকে দলীয় সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি অবাক করেছে। তবে জনগণের ওপর আমার আস্থা আছে। আমি মনে করি সব ধরণের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে ভোটাররা আমার পক্ষে রায় দেবেন।’
উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী হান্নান ভূইয়া স্বপন বলেন, ‘প্রতীক না থাকার বিষয়ে মন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সবার মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।’
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মনির হোসেন বলেন, ‘প্রতীক না থাকলেও দলীয়ভাবে সমর্থন দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’ একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘একটি মহল প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।’
এসব প্রসঙ্গে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আব্দুল মমিন বাবুল বলেন, ‘আমরা চারজনকে সমর্থন দিয়েছি। তারা প্রত্যেকেই আমাদের দলের নেতাকর্মী। এক্ষেত্রে দোষের কিছু দেখছি না। এটা সাংঘর্ষিক কোনো বিষয়ও নয়।’
২৬ ডিসেম্বর আখাউড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ মানুষের চাওয়ার প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ইচ্ছায় কোনো ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিপরীতে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।