বিদ্যমান কারা আইন আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার কারা কনভেনশন সেন্টারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারামুক্ত বন্দিদের মধ্যে জীবিকায়ন সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, কারা আইন সংশোধন করে আধুনিক ও সময়োপযোগী আইন হিসেবে প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়ে কারা অধিদপ্তর এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির মাধ্যমে সরকার ‘বাংলাদেশ প্রিজন্স অ্যান্ড কারেকশনাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।
কারাগার হবে সংশোধনাগার- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কারাবন্দিদের অপরাধপ্রবণতা থেকে মুক্ত করে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এ আয়োজন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় কারাগারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বন্দিসহ কারা কর্মকর্তাদের মানবিক এবং প্রশাসনিক বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কারা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, বন্দিদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনসহ যথাযথ আইনের পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে আজ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারামুক্ত বন্দিদের মধ্যে জীবিকায়ন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জার্মান রাষ্ট্রদূত পিটার ফারেনহোল্টজ বলেন, আজকের গৃহীত উদ্যোগটি বাংলাদেশ কারা বিভাগের সংশোধনাগারের পরিণত হওয়ার পথে একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। কারা অভ্যন্তরে বন্দিদের যথাযথ প্রশিক্ষণের বিষয়ে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে সহযোগিতা দিচ্ছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ আইন সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে আমরা বাংলাদেশ সরকারের পাশে আছি।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, আজ বাংলাদেশের কারাবন্দি এবং তাদের পরিবারের সদস্য যারা যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব থেকে উপকৃত হচ্ছেন তাদের জীবনে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনাকে উদযাপন করছে। আমি আনন্দিত যে সমাজে নিজেদের টেকসইভাবে পুনর্বাসিত করতে অনেক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি এই যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে জীবন-জীবিকার সহায়তা পাবে।
অনুষ্ঠানে করোনাকালীন গৃহীত সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কারা অধিদপ্তর ও জিআইজেড এর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা আহছানিয়া মিশনের যৌথ উদ্যোগে সেলাই মেশিন, ইলেক্ট্রনিক টুলবক্স, ভাসমান টি-স্টলের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন জীবিকায়ন সামগ্রী বিতরণ করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে এ প্রোগ্রামটি বাস্তবায়নে কারা অধিদপ্তরকে কারিগরি সহায়তা করছে জিআইজেড। এতে অর্থ সহায়তা করছে জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিএমজেড) এবং ব্রিটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগ) ড. তরুণ কান্তি শিকদার, অতিরিক্তি কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল আবরার হোসেন, রুল অব ল প্রোগ্রামের প্রধান প্রমিতা সেনগুপ্ত, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি রফিকুল আলম প্রমুখ।