১৪ দিনের মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়া অসম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
আজ বুধবার সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যেকোনো অভ্যুত্থানের পর এমন ঘোষণাপত্র স্বাভাবিক। সরকার চেয়েছে তাদের মাধ্যমে দেওয়া হোক। সকলের সাথে কথা বলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ছাত্ররাও চাচ্ছে সবার ঐকমত্য। ১৪ দিনের মধ্যে অসম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, নতুন বছরে নির্বাচনসহ সরকারের সামনে তিনটি লক্ষ্য রয়েছে। জুলাই–আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, রাজনৈতিক মতৈক্য গড়ে তুলে প্রস্তাবিত সংস্কার নিশ্চিত করা ও রোডম্যাপ অনুযায়ী নির্বাচন করা। এর সাথে সাধারণ কর্মকাণ্ড এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখাও সরকারের লক্ষ্য।
সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিএনপি বলেছে সংস্কারের প্রয়োজন আছে, তারাও লিখিত মত দিচ্ছেন। তবে সংস্কার কতটা ব্যাপক হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কেউ বলছে মৌলিক সংস্কার আগে, কেউ বলছে নির্বাচন কিন্তু সরকারের কাছে সবই গুরুত্বপূর্ণ।
গত ২৯ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ৩১ ডিসেম্বর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কথা জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত সোমবার এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, সরকারই জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে।
প্রেস সচিবের বক্তব্যের পর ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ কর্মসূচি স্থগিত করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর স্থলে একই সময় একই স্থানে ঘোষণা করা হয় মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি। মঙ্গলবারের এই কর্মসূচি থেকে ঘোষণাপত্র দিতে সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
বৈঠকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা রিজওয়ানা। তিনি বলেন, আজকের কেবিনেট বৈঠকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা দেখিয়েছেন কীভাবে আগুন লাগে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হতে সংগৃহীত আলামত বিদেশে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা বলেন, অগ্নিকাণ্ডের প্রতিবেদনে সরকার সন্তুষ্ট। উদ্বেগের বিষয় ছিল, কারণ এখানে আমরাই অফিস করি। যেভাবে তদন্ত হয়েছে তা ভরসা না করার কারণ নেই।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের অবস্থান হচ্ছে শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তার বিচার করা। কোন দল নির্বাচন করবে, না করবে তা নির্বাচন কমিশন বলতে পারে। সরকার আওয়ামী লীগ নিয়ে তো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।