২৮ অক্টোবরের সহিংসতার দায় বিএনপি নেতারা এড়াতে পারবেন কি, প্রশ্ন তুলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যারা ঢুকেছে তাদের চিহ্নিত করে মামলা হবে। পুলিশকে পিটিয়ে হত্যার জন্য মামলা হবে। হাসপাতালে হামলার ঘটনায় মামলা হবে। গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায়ও মামলা হবে। আমার জানা মতে শ’খানেক পুলিশ আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগের মহিলা নেত্রীদের ওপরও হামলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে চাইলে মামলাগুলো নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ সহিংসতা যখন হচ্ছিল তখন সিনিয়র নেতারা মিটিং করছিলেন। তাদের ডিএমপি কমিশনার বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন তাদের মহাসমাবেশের সীমানা কতো দূর হবে, তারা জানিয়েছিল নাইটেঙ্গেল মোড় পর্যন্ত। কিন্তু তারপরও যে সহিংসতা হয়েছে সেটির দায় কি বিএনপি নেতারা এড়াতে পারবেন?
বিএনপির উগ্রকর্মীদের আক্রমণ থেকে হাসপাতালও রেহাই পায়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপি প্রচার চালিয়েছিল তাদের সমাবেশে দশ লাখ লোক নিয়ে আসবেন। আমাদের পুলিশ কমিশনার তখন বলেছিলেন, এমনিতেই ঢাকা শহরে যানজট, তারপর দশ লাখ লোক নিয়ে আসবেন। আপনারা কোথায় কী করতে চান, মাঠে যান। তারা মাঠে না গিয়ে নিজেদের দলীয় অফিসের সামনে সমাবেশ করেছেন।
আমাদের পুলিশ কমিশনার তাদের কাছে কয়েকটি প্রশ্ন রেখেছিলেন, কেবল তাদেরই না, আমাদের আওয়ামী লীগের সমাবেশ নিয়েও প্রশ্ন করেছিলেন। সেগুলো হচ্ছে, আপনারা কতক্ষণ সমাবেশ করবেন, কোন জায়গা থেকে কোন জায়গা পর্যন্ত আপনাদের সমর্থকরা অবস্থান করবেন? আপনারা কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারবেন না। পুলিশ কমিশনার এমন অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, তারা জানিয়ছিলেন, একদিকে নাইটিঙ্গেল মোড়, অন্যদিকে, ফকিরাপুলের মোড় পর্যন্ত তারা থাকবেন। কোনো সহিংসতা না করারও অঙ্গীকার করেছিলেন তারা। আমরা অনেক দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, পাশাপাশি আমাদের আওয়ামী লীগও একটা শান্তি সমাবেশ ডেকেছিল। সেটাও এতো মানুষ সেখানে এসেছিল, সঙ্গত কারণে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে দিয়েও দুয়েকটা ছোটো ছোটো দল যাচ্ছিল। বিশেষ করে টেম্পু ও লেগুনা নিয়ে নারীদের একটি গ্রুপ যাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ করে লেগুনায় আক্রমণ করে নারীদের মারধর করা হয়েছে। পুলিশ তখন তাদের বাধা দেয়।
এরপর বিএনপির নেতাকর্মীরা মারমুখী হয়ে যান। তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এখানেই শেষ না, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটক ভেঙে ঢুকে যেতে কোনোদিন কোনো দেশে দেখিনি। সে ঘটনাও তারা ঘটিয়েছে। তারা ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে যায়, তখন বাধ্য হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে এগুলো মোকাবিলা করে পুলিশ। তখন তারা বাধ্য হয়ে তাদের হটিয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত নিয়ে যায়। এরপর বিএনপি নেতাকর্মীরা যেসব ধ্বংসাত্মক কাজ তারা করেছে, আমরা দেখেছি। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের ভেতরে ঢুকেও তারা ভাঙচুর করে। ভেতরে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
তারা যেখান দিয়ে গেছে, সেখানেই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। নাইটিঙ্গেলের পরে কিন্তু পুলিশ আর ঢোকেনি। পরবর্তীতে আমরা দেখলাম, বিএনপি নেতাকর্মীরা পকেটে করে নিয়ে আসা ইটপাটকেল ও গুলতি দিয়ে মারবেল ছুড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। যা আমাদের কাছে ভিডিও করা আছে।