প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের সহযোগিতা ছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা সম্ভব নয়।’ তিনি এই ঘটনায় তৎকালীন সরকার ও প্রশাসনকে সরাসরি দায়ী করেছেন।
শনিবার সকালে ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিএনপি সরকার আলামত নষ্ট করে ফেলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন দেয় এবং জজ মিয়া নাটক সাজায়। আহতরা হাসপাতালে গিয়ে পর্যন্ত চিকিৎসা পায়নি। তাদেরকে তখন সংসদেও কথা বলতে দেয়নি বিএনপি-জামায়াত। উল্টো এই ঘটনার দায় আওয়ামী লীগের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একুশে আগস্টের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হওয়ার পর ওই দিনই চারজনকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া ও তারেকের তত্ত্বাবধায়নে তাদের পাঠানো হয়। ওই ঘটনায় তখনকার পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাই জড়িত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘বাবার পথ ধরেই এদেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি। কয়েকবার মুত্যু সামনে এসে দাঁড়িয়েছি, আল্লাহ বাঁচিয়েছে। এত বাধা অতিক্রম করে এসেছি। এখন এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার কাজ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন কারারক্ষী এরমধ্যে জড়িত ছিল। জেলখানার ভেতর গ্রেনেড পাওয়া গেল (২১ আগস্ট ব্যবহৃত গেনেডের ন্যায় আর্জেজ গ্রেনেড) এরা অনেকগুলো ক্রিমিনাল জোগার করেছিল তার মধ্যে কিছু জেলখানা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু প্রত্যেকের হাতে যে গ্রেনেডগুলো ছিল প্রত্যেকে সেগুলো মারতেও পারেনি। রমনা হোটেলের সামনের গলিতে সেই গ্রেনেড পরিত্যক্ত পাওয়া যায় এবং কয়েকটি জায়গায় পাওয়া যায়।
আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রারম্ভিক ভাষণ দেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চারনেতা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহিদ, ১৫ আগস্টের সকল শহিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহিদ এবং সম্ভ্রমহারা দু’লাখ মা-বোন স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিএমএ মহাসচিব ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও দক্ষিণের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী প্রমুখ।