দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা ঐতিহাসিক সফর ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় প্রধান উপদেষ্টার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা ঐতিহাসিক সফর ছিল। সভায় কমপক্ষে ৪৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সুইজারল্যান্ড সফর বড় একটি অর্জন। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে প্রথমেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য সবকিছু করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জার্মানি ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশগুলোর একটি। বৈঠকে ওলাফ শলৎস স্ব-উদ্যোগে বাংলাদেশে বিজনেস ডেলিগেশন, স্পেশাল ডেলিগেশন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। তারা এসে নীতি-নির্ধারক ও দেশের বাণিজ্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে জার্মানির সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে।
প্রেস সচিব বলেন, সফরে পতিত সরকারের বিদেশে পাচার করা ২৩৪ বিলিয়ন ডলার কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে ফিনল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ডের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর।
তিনি বলেন, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা খুবই স্লো প্রসেস। এটার জন্য যত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সরকার সেই পদক্ষেপই নিয়েছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে টাস্কফোর্স, অ্যাসেট রিকভারি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ১১টা টিম কাজ করছি। সারা বিশ্বের টপ টপ এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছি। পাচার করা টাকা ফেরত আনা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, যে টাকা পাচার হয়েছে সেটা বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষের টাকা। তাদের টাকা চুরি করে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার চোরত্রন্ত্রের লোকজন। সেই টাকা আমরা যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনব। সেটার জন্য আমরা গ্লোবালি একটা সমর্থক চাচ্ছিলাম। সেটাতে সবাই অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছে। এটা আমাদের টপ প্রায়োরিটি। প্রফেসর ইউনুস যখনই বিশ্বের টপ লিডারদের সঙ্গে কথা বলছেন তখন তিনি এ বিষয়টা তুলছেন।
প্রেস সচিব বলেন, জুলাই-অগাস্টের নৃশংসতা নিয়ে জাতিসংঘ শিগগিরই তার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন- পালাবেন না, কিন্তু পালিয়েছেন। তার চেলা-চামুন্ডারাই সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বাংলাদেশের কসাই। যারা গুজব ছড়াচ্ছেন এটা যদি আইনের ভঙ্গ হয়, তবে আইনগতভাবে তা দেখা হবে।
প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য যুক্তরাষ্ট্র বন্ধ করছে না। এ জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার এ বছরই বড় আকারে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করবে। এতে ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আয়োজিত সম্মেলনের সহ-আয়োজক জাতিসংঘ।