নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে ইলিয়াস কাঞ্চনের অবদান অনস্বীকার্য। আজ সেগুন বাগিচায় কচি কাঁচা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত ‘বিশেষ শিক্ষা (প্রতিবন্ধী শিক্ষা) ব্যবস্থার অন্তরায় ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন, গণ অধিকার পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নুরুল হক নুর।
অনুষ্ঠানে নুরুল হক নুর আরো বলেন, এর আগে কোন সভা সমাবেশে আমি ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইকে কোথাও পাইনি। প্রথম কোন অনুষ্ঠানে ওনাকে পেয়েছি একারণে আজ কিছু কথা আমি বলতে চাই। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ১৯৯৩ সালে একটি বিয়োগান্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে সূচনা হয়। ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই যখন রূপালী পর্দার ঝলমলে তারকা সেই সময় তিনি সেই অধ্যায়কে পেছনে ফেলে দিয়ে গণমানুষের কাতারে রাজপথে নেমে এসেছেন এবং নিজের খেয়ে নিজের পড়ে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এই আন্দোলনটি এতদুর টেনে নিয়ে এসেছেন। তার এই দীর্ঘ জার্নির জন্য নিঃসন্দেহে তিনি সাধুবাদ পাবার যোগ্য এবং আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই।
আমি একটি কথা বলতে চাই যেকোন আন্দোলন নিয়ে কোন ধরনের যদি গণবৃদ্ধি লাভ করে সেটা কখনো না কখনো বিস্ফোরণ হয়। ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন নিরাপদ সড়ক চাই নামে সে আন্দোলনটি ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের দ্বারা বিস্ফোরিত হয়। সেসময় আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করে রাজপথে নেমে আসি। তখন একটি দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে কোটা বৈষম্য আমরা অনেকটা দুর করতে পারলেও এক সময় সে আন্দোলনকে থামিয়ে দেয়া হয়েছিলো।
পরবর্তিতে রমিজ উদ্দীন স্কুলের ২শিক্ষার্থী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা সারাদেশে সংঘটিত হয়ে একটা বিপ্লব তৈরী করেছিলো এবং নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনটি ব্যাপক আকারে প্রতিষ্ঠা পায়। যার অবদান ইলিয়াস কাঞ্চনের এটা অনস্বীকার্য।
আজ আমি বলবো দেশের যেকোন ক্লান্তিলগ্নে যে কোন সময় ইলিয়াস কাঞ্চন সবার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইলিয়াস কাঞ্চন একমাত্র ব্যাক্তি যিনি সকল দলমতের উর্ধে থেকে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে নিজের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন এই নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনটির মাধ্যমে।
এই নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনটি একটি যৌক্তিক দাবী বলে আমরা মনে করি এবং ফ্যাসিবাদ সরকারের বিদায় হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদ সরকারের গোষ্ঠীর কারণে এই আন্দোলনটি সাকসেস হয়নি তা দেশবাসী জানে। রাজনীতির মাঠে সড়কের যে বিষয়টি সেটি ঘুরপাক খেতো বলে এবং তারা নিয়ন্ত্রণ করতো বলে ইলিয়াস কাঞ্চনকে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে, তার ছবি পুড়ানো হয়ছে, কুশপুত্তলিকায় জুতার মালা পড়ানোসহ নানা রকম ভাবে তাকে হেনস্থা করা হয়েছে।
এই মানুষটি কি তার ছবিতে জুতার মালা পাবার মতো আন্দোলন করেছেন? প্রশ্ন রেখে নুর বলেন, ইলিয়াস কাঞ্চন একটি সামগ্রীক আন্দোলন করেছেন। কেন তাকে সেই সময় হেনস্থা করা হয়েছিলো? এই কারণে করা হয়েছিলো তারা এই দেশে এক প্রকার ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করে রেখেছিলো জনগণের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছিলো এই কারণে এই কাজগুলো তারা করেছিলো।
নুরুল হক নুর বলেন, আমি কাঞ্চন ভাইকে বলবো শুধু নিরাপদ সড়ক নয় দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠী যাদের সমস্যা আছে যারা নির্যাতিত এবং যারা প্রতিবন্ধী তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যহত করে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিলো এই ব্যাপারেও তিনি সোচ্চার ভূমিকা রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের সর্ব মহলে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সর্ব মহলে তার কথা বলার সুযোগ আছে। আমাদের অনেক তরুণের আদর্শের একটি জায়গায় ইলিয়াস কাঞ্চন অবস্থান করছেন। আমরা এটাই বলব আপনি ইলিয়াস কাঞ্চন এগিয়ে যান আমরা আপনার সাথে আছি।