English

17 C
Dhaka
রবিবার, জানুয়ারি ৫, ২০২৫
- Advertisement -

তিন কারণে ভোটার তালিকা বিতর্কিত: ইসি আবুল ফজল

- Advertisements -

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, ভোটার তালিকা বিতর্কিত হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছে কমিশন। এজন্য তারা বাড়ি বাড়ি হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

বিভিন্ন টকশোতে বলা হচ্ছে ভোটার তালিকা সঠিক নয়। আজ (বৃহস্পতিবার) যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করলেন তা সঠিক কি না— জানতে চাইলে ইসি আবুল ফজল বলেন, বিতর্কিত ভোটার তালিকা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময় দেখেছি। আপনারা আলোচনা করেছেন এবং আমাদের সাধারণ মানুষের মাঝেও এ ধরনের একটা পারসেপশন আছে। আমাদের বাড়ি বাড়ি যাচাই করতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো এটি।

তিনি বলেন, এ কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর শুদ্ধ ভোটার তালিকা ছাড়া কনফিডেন্ট মনে করছি না। এজন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করা। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, ভোটার তালিকাকে যে বিতর্কিত বলছি, আমরা শুদ্ধতার অভাব বলছি, এটি মূলত তিনটি কারণে হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রথম কারণ— মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ না পড়া। দ্বিতীয়ত- দ্বৈত ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আর তৃতীয়ত- বিদেশি নাগরিক প্রতারণার মাধ্যমে তালিকা ভুক্ত হয়েছেন কি না। সম্প্রতি আমরা একাধিক এমন ইনসিডেন্ট পেয়েছি।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম এলাকায় রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার হতে না পারেন, সেজন্য একটা বিশাল ব্যবস্থাপনা আছে এবং ওই এলাকাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করে সেখানে আলাদাভাবে ভোটার তালিকাভুক্ত করা হয়। এ কড়াকড়ি থেকে বাঁচতে ৩০ জন রোহিঙ্গা নীলফামারী সদরে গিয়ে ভোটার হয়েছেন। এগুলোর প্রমাণ আমাদের সামনে আছে। এভাবে আমাদের ভোটার তালিকা বিতর্কিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি তথ্য সংগ্রহ করতে যান, সেখানে স্থানীয় কোনও ব্যক্তি আমাদের সহায়তা করেন, সেখানে দেখা যায় নিজের ভোটার যারা আছে তাদের বয়স বাড়িয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেন। আবার দেখা যায় অন্য কারও ১৮-১৯ বছর হলেও ভোটার তালিকাভুক্ত হতে দেন না।

তিনি আরও বলেন, এর বাইরেও আরও অনেক ধরনের কারণ আছে। তবে এগুলো মূল। আমরা এবার সেভাবে সেনসিটাইজ (সংবেদনশীল) করছি। ইতোমধ্যে আমাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ইতোমধ্যে আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার দুটি বিভাগ পরিদর্শন করেছেন। আমরা কমিশনাররাও পরিদর্শনে বের হব। আমাদের ডিজি এনআইডিসহ আমাদের সচিবালয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও মাঠ পর্যায়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি কমিশন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। আশা করছি আমরা একটা সন্তুষ্টির জায়গায় পৌঁছাতে পারব ভোটার তালিকার বিষয়টি নিয়ে।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সংস্কার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম- সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে ওভারল্যাপিং হবে কি না— এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তা মনে করছি না। কারণ সংস্কার কমিশন যে সংস্কার প্রস্তাব দিক না কেন ভোটার তালিকা তো একটা লাগবে। ভোটার তালিকা ছাড়া তো আর ভোট হবে না। আমরা মনে করি না যে ভোটার তালিকা রিলেটেড আমরা কোনও সমস্যা ফেস করব।

নির্বাচন কমিশনের মাঠ কার্যালয়গুলোতে প্রচুর ভোগান্তি হয়। এ পর্যন্ত এ ভোগান্তি নিরসনে কোনও পদক্ষেপ নিয়েছেন কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে এনআইডি সেবায় যথেষ্ট ভোগান্তি হচ্ছে আমরা দেখছি। আমরা চিহ্নিত করেছি প্রায় চার লাখের কাছাকাছি, তিন লাখ ৭৮ হাজার আবেদন পেন্ডিং ছিল। আমরা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি এবং আমাদের সচিবালয় থেকে আমাদের সচিব, ডিজি এনআইডিসহ সবাই ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছেন। যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নাগরিকরা তাদের বৈধ সেবা পান। তবে এ কথাও সত্য এসব আবেদনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আবেদন রয়েছে, যারা প্রতারণার আশ্রয় নিতে চাচ্ছেন বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান। তাদের জন্য যাতে নাগরিকেরা ভোগান্তিতে না পড়েন সেজন্য আমরা আরও ভালো পদ্ধতি নিতে যাচ্ছি।

২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদ করার এ কার্যক্রম কতদিন চলবে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যদি ভালোভাবে কাজ করতে পারি তাহলে ৩০ জুনের মধ্যে আমরা এটি সম্পন্ন করতে পারব।

ডিসেম্বরের শেষে যদি সংসদ নির্বাচন হয় তাহলে আপনারা যাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার করছেন তারা কি নির্বাচন ভোট দিতে পারবেন কি না এবং আইন সংশোধন করে তাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আবুল ফজল বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে বলেছেন- ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন তিনি আশা করছেন। আমাদের নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা সবসময় প্রস্তুত।

তিনি বলেন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন করাও এক ধরনের প্রস্তুতি। আমাদের এ ভোটার তালিকা সন্নিবেশ করতে আইনি কোনও জটিলতা নেই। তফসিল ঘোষণার আগে একটি তালিকা প্রকাশ হবে। সেই তালিকায় আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত করব। দ্বিতীয়ত এ বছরে যারা ভোটার হবেন অর্থাৎ ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী ভোটার নিবন্ধন আইনের ধারা ৩(জ) অনুযায়ী যোগ্যতার তারিখ হলো প্রতি বছরের ০১ জানুয়ারি। একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করেছি যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তরুণ ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়ে গিয়েছেন ভোটের আগে, তাহলে প্রয়োজনে অর্ডিন্যান্স জারি করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না। এই সম্ভাবনাটা আমরা যাচাই করে দেখব। এটা এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয়।

ভোটারের সর্বনিম্ন বয়স ১৭ করার বিষয়ে কমিশন কী ভাবছে— জানতে চাইলে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ১৭ বছর বয়সে ভোটার নিয়ে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা তার ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন। আমরা শুনেছি। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। যদি ভবিষ্যতে রাজনৈতিক কোনও মতৈক্য হয়, কোনও সিদ্ধান্ত আসে, যদি সংবিধানে পরিবর্তন আসে, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন