জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও ঢাকার ঈদ জামাতগুলোতে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। এছাড়া ঢাকার অন্যান্য সব স্থানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদ জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সমন্বিত, সুদৃঢ়, সুবিন্যস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
রোববার (৩০ মার্চ) সকালে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বরাবরের মতো এবারো জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। এখানে একত্রে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করবেন। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদের জামাত। ঢাকা মহানগরে মোট ১১১টি ঈদগাহ এবং এক হাজার ৫৭৭টি মসজিদে মোট এক হাজার ৭৩৯টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ডিএমপি কমিশনার জানান, প্রবেশ গেটগুলোতে তল্লাশির জন্য আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেকটর থাকবে। পুরো জাতীয় ঈদগাহ ময়দানসহ আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতাভুক্ত থাকবে। প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্যামেরা কন্ট্রোলরুম থেকে সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ঈদগাহ ময়দানে আসার প্রধান তিনটি সড়কের (মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব ও শিক্ষা ভবন) প্রবেশমুখে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেকটর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা, প্রবেশ গেইট ও পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান তিনি।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঈদগাহ ময়দান ও আশেপাশের এলাকায় এসবির টিম এবং সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড সুইপিং করবে। সোয়াত ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট স্ট্যান্ডবাই থাকবে। সাদা পোশাকে ডিবি ও সিটিটিসি সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশিকাজে সহায়তার জন্য নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো প্রকার ব্যাগ, ধারালো বস্তু, দাহ্য পদার্থ নিয়ে না আসার জন্য অনুরোধ রইল। সবাইকে জামাত শেষে সুশৃঙ্খলভাবে বের হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানাবেন, কিংবা প্রয়োজনে ৯৯৯ অথবা পুলিশ কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা দুই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিই। একটি হলো ওভার, আরেকটি কভার। সবকিছু তো আমরা ডিসক্লোজ করি না। অনেককিছু নিরাপত্তার স্বার্থে গোপন রাখি। ঈদে কোনো ঝুঁকি নেই।
তিনি আরও বলেন, ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় ১৫ হাজার পোশাকধারী পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। সঙ্গে এটিইউ, সিটিটিসি, ডিবি সবার সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। বাংলাদেশ আর্মির সদস্যরাও থাকবেন। সবাই মিলে সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছি।
ঈদ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সবসময় সতর্ক রয়েছি। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, নিষিদ্ধঘোষিত যেসব দল আছে, সেসব দল যেন কোনো কার্যক্রম পরিচালনা না করতে পারে, সে বিষয়ে আমরা সদা সতর্ক।