জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা যেসব দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন তা যৌক্তিক বলে মনে করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি জানিয়েছেন, তাদের দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এ কথা জানান।
বুধবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনের সড়কে আহতদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ভুল-ত্রুটি হয়েছে বলেই চিকিৎসাধীন আহতদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলেই তারা হাসপাতাল ছেড়ে সড়কে নেমে এসেছেন।
তিনি বলেন, ভোররাত পর্যন্ত আমি ক্ষুব্ধ চিকিৎসাধীন আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি। নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আহতদের অনেকেই এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি। সেটির দ্রুত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
‘গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মনে যে একটা ক্ষোভ হয়েছে, আমরা মনে করি আমাদের এটা দেখার দরকার আছে। নিশ্চয়ই কোনো ভুল-ত্রুটি আমাদের দিক থেকে হয়েছে, একেবারেই ভুল হয়নি এমনটা নয়। চারদিকে দেখতে গিয়ে কোনোভাবে ভুল হয়ে যেতে পারে।’
উপদেষ্টা বলেন, হাত-পায়ে ব্যান্ডেজ অবস্থায় যে তারা রাস্তায় ছিলেন, এটা দেখে আমরা থাকতে পারিনি। এজন্য আমরা কয়েকজন উপদেষ্টা রাতে সেখানে গিয়েছিলাম। তারা যে শুধু চিকিৎসা চাচ্ছেন তা নয়, তাদের মধ্যে এমনও আছেন যিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ঋণ নিয়েছিলেন, তাদের বাড়িতে কিস্তির জন্য এসে ধরনা দেয়। তারা সে টাকা কোথায় পাবেন? তাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারটা তারা চান। আমরা মনে করি সেটা খুবই যৌক্তিক একটা দাবি। এটা আমরা মনে করি, আজ দুপুরে বসলে একটা সমাধানে আসতে পারবো।
দেশবাসীর কাছে আহতদের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, তাদের প্রতি আমাদের ঋণ অনেক বেশি। কাজেই তাদের প্রতি কোনো গাফেলতি হতে দেওয়া যাবে না।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহীনা ফেরদৌসী।
গতকাল বুধবার সকালে পঙ্গু হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। চিকিৎসাধীন কয়েকজন আহত ব্যক্তির খোঁজ-খবর নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন উপদেষ্টা। তখনই তিনি ক্ষোভের মুখে পড়েন। উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন আহত ব্যক্তিরা।
পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর আহত ব্যক্তিরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে পাশের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত অভ্যুত্থানকারী ব্যক্তিরাও সেখানে এসে বিক্ষোভে যোগ দেন।