স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের আমলে ব্যাপক খুন-গুম ছিল। এখন খুন-গুম আমরা সচরাচর দেখছি না।
রবিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
আজ বিএনপির মানববন্ধনে বক্তারা জানিয়েছেন বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে খুন ও গুমের দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিত করেছে- এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মৃদু হেসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে কতটুকু খোঁজ-খবর রাখেন সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। বাংলাদেশ এখন একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। এখানে সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চরমপন্থি, বনদস্যু, জলদস্যু ক্রমান্বয়ে সারেন্ডার করেছে। এগুলো বিদায় নিয়েছে। খুন-গুমের কথা যদি বলতে হয়, ২০০৪-এ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি ছিল, সেখানে ৪৭০ জনের কাছাকাছি গুম হয়েছিল এক বছরে। প্রতি বছর প্রতিনিয়ত তাদের গুম-খুন হতো। এখন এসে যদি বলে এতগুলো খুন, এতগুলো গুম হয়েছে। সেগুলো তো বলতেই পারে।
তিনি বলেন, এখন খুন-গুম আমরা সচরাচর দেখছি না, এগুলো আমরা ব্যাপক হারে দেখেছিলাম ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। আমরা জঙ্গি-সন্ত্রাসের উত্থান দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার দৃশ্যটা আপনারা দেখেছেন, খোদা তাকে রক্ষা করেছেন। ৬৩টি জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা করেছিল। এসব কিন্তু সেই আমলেই হয়েছে। এগুলো একটা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। এখন এগুলো করে যারা স্বপ্নে দেখছেন একটা বিভ্রান্তি ছড়াবে। তারা একটা দুঃস্বপ্ন দেখছেন।
মন্ত্রী বলেন, সেই খুন-গুমের কথা হয়তো অনেকেই ভুলে গেছেন। আমি আবারও তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, খুন-গুমের শুরুই করেছিলেন তারা (বিএনপি)। আমরা এগুলো বন্ধ করে আজ একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছি।
বিএনপির মানববন্ধনেও বাধা দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘পুলিশ অন্য জায়গায় গিয়ে মানববন্ধন করার অনুরোধ জানিয়েছিল। যানজট সৃষ্টি হতে পারে, সেজন্যই তারা অন্য জায়গায় করতে বলেছিল। সেই জায়গায় তারা যায়নি। করতে দেয়নি ঘটনা সত্যি নয়।’
হেফাজতে ইসলাম ঢাকায় সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যদি আপত্তি থাকে, তবে তারা করতে পারবে না। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যদি মনে করে এখানেই হলে পরিবেশ নষ্ট হবে, সেখানে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীরও দেখার বিষয় রয়েছে।যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। সেগুলো দেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে তাদের বদলি করা হবে।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পুলিশের প্রতি আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই। নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিচ্ছে সেটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন যেভাবে চাচ্ছে, আমাদের পুলিশ সেভাবেই কাজ করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে নির্বাচন কমিশন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে চিঠি আগে আসুক। নির্বাচন কমিশন এগুলো স্টাডি করে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই একটা সিদ্ধান্ত আমাদের দিচ্ছে। সে সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে না এলে তো আমরা অ্যাডভান্স কিছু বলতে পারি না।