বার কাউন্সিলের বেনেভোলেন্ট ফান্ডে ৩০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ ফান্ড থেকে এ টাকা দেবেন তিনি।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘আইনজীবী মহাসমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ১৫ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন উদ্বোধন করেন।
এ সময় বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের কল্যাণ ও বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্টদের কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ, একেবারে নিম্নস্তর থেকে শুরু করে উচ্চস্তর, সকলেই যেন ন্যায় বিচার পায়, উন্নত জীবন পায়, দারিদ্রমুক্ত হয় সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি তখন থেকেই আমাদের লক্ষ্য যেন আইনের শাসন হয়। কারণ বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যার পর প্রথমে খন্দকার মোশতাক, বেইমান মোনাফেক, জিয়াউর রহমানের সহায়তায় ক্ষমতা দখল করে। কিন্তু টিকতে পারেনি। কারণ যারা পেছন থেকে এভাবে কলকাঠি নাড়ায় এসব বেইমানদের তারা ব্যবহার করে, রাখে না। এটাই হলো বাস্তবতা। কাজেই মোশতাককে বিদায় নিতে হয়। আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। জিয়াউর রহমান, একাধারে সেনাপ্রধান, সাথে সাথে আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। ইনডেমনিটি জারি করে আমাদের বিচার থেকে বঞ্চিত করে। নির্বাচন পক্রিয়া ধ্বংস করে। নিজেই দল গঠন করে কারচুপি করে ২/৩ শতাংশ মেজরিটি দিয়ে সংবিধান ক্ষত-বিক্ষত করে।’
তিনি বলেন, ‘এই বিএনপি ক্ষমতায় এসে আমাদের কত নেতা হত্যা করেছে। ২০১৩ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে আরও ভয়াবহ পরিবেশ তৈরি করেছে। এই অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত, সেই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে, এটাই আমার অনুরোধ। তাদের শাস্তি কেন দেরি হবে? আগে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিল, এখন আন্দোলনের সুযোগে সামনে এসেছে। তাদের মামলায় যেন তারা সাজা পায়। এটা আপনাদের কাছে আমার দাবি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশের বিচারকাঠামো গঠিত হয়েছে। মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য সবকিছু তিনি করে গেছেন। সমুদ্র সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তিনি শুরু করেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ছয় দফা দিয়েছিল। ছয় দফা যখন দিয়েছিল তখনও তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষ গণঅভ্যুত্থান চালিয়ে জাতির পিতাকে উদ্ধার করেছিল। তিনি বারবার গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেক সময় তাকে সাজাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি থেমে যান নাই।’
আইনজীবী মহাসমাবেশে সভাপতিত্বে করেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্যসচিব শেখ ফজলে নূর তাপস, অ্যাটর্নি জেনারেল ও বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন প্রমুখ।