অন্ধজনে আলো দেওয়ার চেয়ে বড় কাজ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অন্ধত্ব মানুষের জীবনকে অর্থহীন করে দেয়।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বেলা পৌনে ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫ বিভাগের ২০ জেলার ৭০ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপিত কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের কার্যক্রম উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কমিউনিটি ভিশন সেন্টারে চিকিৎসার ফলে তারা (অন্ধ) সুস্থ হবেন। দেখতে পাবেন, জীবনটা হবে অর্থবহ। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আমরা সেবাটা দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক উপজেলায় এই কমিউনিটি ভিশন সেন্টার করে দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জন্মান্ধতা দূর করার জন্য প্রসূতি মাকে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করেছি। প্রসবের আগে ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয়। যার কারণে এখন সেটার ভালো রেজাল্ট পাচ্ছি। জন্মান্ধতা কমে গেছে। এছাড়াও ভিটামিন ই-সহ নানা টিকা দিয়ে রোগ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করছি। যক্ষ্মাসহ নানা রোগ হলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীনতাবিরোধী, খুনি ও লুটপাটকারীরা ক্ষমতায় আসে। যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে—এটা আশা করা যায় না। আমরা ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছিলাম। পরে ২০০১ সালে বিএনপি এসে এগুলো নষ্ট করেছে।
বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণে আমি ভিডিও কনফারেন্সে আপনাদের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কথা বলছি। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ব্রডব্যান্ড লাইনসহ নানা সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করছি। মুজিববর্ষে কেউ সেবা বঞ্চিত হবে না। কেউ গৃহহীন থাকবে না। এজন্য সারাদেশে ঘর করে দিচ্ছি। নদী ভাঙাদের ঘর করে দেওয়ার জন্যও আলাদাভাবে বাজেটে ১০০ কোটি টাকা রেখেছি।
উদ্বোধন শেষে পীরগঞ্জে চক্ষু চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন এক উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন পীরগঞ্জের ওই নারী বলেন, আমার স্বামী এখান থেকে অপারেশন করে কালো চশমা পেয়ে অনেক সুস্থ আছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেন—আপনি আর কিছু বলবেন? জবাবে তিনি বলেন, বলতে চাই—চক্ষু চিকিৎসায় আমাদের এখানে আরও অনেক সুবিধা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন। তার কথা শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই এগুলো করে দিচ্ছি, সব করে দেব।
এর পর প্রধানমন্ত্রী হাসতে হাসতে বলেন, আরে শ্বশুরবাড়ি বলে কথা, একটু বেশি কথা তো শুনতেই হবে। এ সময় করোনা সংকট শেষ হলে পীরগঞ্জে যাবেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ন্যাশনাল আই কেয়ারের পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মোস্তাফা, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান।