বাংলাদেশে লকডাউন বা বিধিনিষেধ কার্যকর করার প্রভাবে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা এক জায়গায় থেমে গেছে বলে সরকার মনে করছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে লকডাউন এবং সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন তথ্য তুলে ধরেছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের পর্যালোচনায় পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, জুলাই মাসের শুরু থেকেই লকডাউন বা বিধিনিষেধের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা গড়ে দুইশো’র ঘরে এবং সংক্রমণ এগার হাজারে আটকে গেছে।’
‘মৃত্যু এখন (দৈনিক) দুইশো দেখছি, হয়তো মৃত্যু ছয়শো বা আটশো দেখতে হতো। যদি এটা (কঠোর বিধিনিষেধ) না করতাম আমরা। সংক্রমণ আমরা এখন দেখছি, এগার হাজার। সেটা হয়তো আরও তিনগুণ বেড়ে যেত’, বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি উল্লেখ করেছেন, লকডাউন বা বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত বলেই সরকার মনে করে।
একইসঙ্গে গ্রামেগঞ্জে সংক্রমণ এখনও উর্ধ্বমুখী। সেই পরিস্থিতিও মন্ত্রিসভার আলোচনায় এসেছে। সেখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতেই কোভিড রোগীর ৭৫ শতাংশই গ্রাম থেকে এসেছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী চলমান বিধিনিষেধ ৫ অগাস্ট পর্যন্ত কঠোরভাবে কার্যকর করার অবস্থানে অটল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টিকা দেওয়ার কার্যক্রম জোরদার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত লকডাউন বা বিধিনিষেধ কঠোরভাবে কার্যকর করার বিকল্প নেই বলে তারা মনে করেন।’
সেজন্য সংক্রমণের চেইন ভাঙার টার্গেট নিয়ে এখন ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ কার্যকর করার ক্ষেত্রে গার্মেন্টস বা কোনো শিল্প কারখানা চালু না করার অবস্থানেই সরকার রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সীমান্ত এলাকাগুলোতে সংক্রমণ বৃদ্ধির মুখে গত এপ্রিল মাসে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে ১ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ঢাকাসহ সারাদেশকে বিধিনিষেধের আওতায় নেওয়া হয়েছিল।
ঈদের সময় সাতদিন বাদ দিয়ে আবার ২৩ জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের লকডাউন বা ‘কঠোর বিধিনিষেধ’ এখন চলছে। এরপর বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে নাকি শিথিল করা হবে-সেই প্রশ্নে সরকারের পক্ষ থেকে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলা হচ্ছে না। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, আগামী সপ্তাহে আবারও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।