English

26 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

যারা রাজাকারের পক্ষে স্লোগান দিয়েছে, তাদের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা প্রয়োজন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

- Advertisements -

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে যারা রাজাকারের পক্ষে স্লোগান নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ‘১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী যখন আন্দোলন শুরু করে, তখন সেখানে বিএনপি-জামাত তাদের প্ল্যান্টেড লোক ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। সেই কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারের পক্ষে স্লোগান এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা এই আন্দোলন করছে, তারা দেশের সংবিধান মানতে চায় না। দেশের অনগ্রসর গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রের কার্যক্রমে যুক্ত করার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানে আছে।’

কোটার বিষয়টি এখন আদালতের এখতিয়ারভুক্ত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে কোটাপদ্ধতি বাতিলের যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল, একজন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট আবার সেটির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ এটি আদালতে বিচারাধীন বিষয়। এটি নিয়ে সরকার কিছু করতে গেলে আদালত অবমাননা হবে, সংবিধানবিরোধী হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটি বুঝেও বিএনপি-জামাতের প্ল্যান্টেড যারা, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাচ্ছে,  আবেগ-অনুভূতিকে ব্যবহার করে সরকারের বিরূদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরূদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে এমনকি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরূদ্ধেও অপপ্রচার চালাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক চীন সফর থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী স্পষ্ট বলেছেন, বিষয়টি যখন আদালতে বিচারাধীন, তখন এ বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সরকার সেই মোতাবেক কাজ করবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি বুঝেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্লোগান, আন্দোলন এগুলো  আদালত অবমাননার শামিল, সংবিধানের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বেদীমূলে চপেটাঘাত। সুতরাং যারা রাজাকারের পক্ষে শ্লোগানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে, আইন-আদালতের মর্যাদা রক্ষার্থে এদের বিরূদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

তিনি জানান, আজ নারী শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছে নারী কোটা রক্ষার জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা দাঁড়িয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য, চাকমা-মারমাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীও  তাদের কোটার জন্য দাঁড়িয়েছে।

এ সময় আওয়ামী লীগকে দেশ পাহারা দিতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নির্বাচন ভন্ডুল করতে চেয়েছিল, সেটি না পেরে কখনো কোটা, কখনো তেল-গ্যাসের মধ্যে ঢুকছে। আর আমরা নির্বাচনের আগে রাজপথে থেকেছি, জয়লাভ করেছি বলে ঘরে বসে থাকা নয়, এখন দেশ পাহারা দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, দেশবিরোধী অপশক্তি যখন  দেশের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তরুণদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বেদীমূলে আঘাত হানার চেষ্টা করছে, তাদের রুখে দিতে রাজপথে থাকতে হবে, দেশ পাহারা দিতে হবে।’

এর আগে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের সরকার দুর্নীতির বিরূদ্ধে শ্লোগান দিয়ে ক্ষমতা দখল করার সময় ক্ষমতায় ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু তারা বেগম জিয়াকে প্রথমে গ্রেপ্তার করেনি। গ্রেপ্তার করেছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। কারণ অন্যায়-দুর্নীতির বিরূদ্ধে এবং গণতন্ত্রের মুক্তি আন্দোলনে শেখ হাসিনাই একমাত্র প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।’

তিনি বলেন, ‘ওয়ান-ইলেভেনের সরকার ছিল বেসামরিক লেবাসে প্রকৃতপক্ষে সামরিক শাসন। আর যারা সেই সরকারের বিভিন্ন পদে আসীন হয়েছিলেন, তারা ছিলেন ভাড়াটিয়া, তারা সেনাসমর্থিত সরকারের ভাড়া খাটতে গিয়েছিলেন। এ ধরনের অনেক লোক আছেন, যারা সুযোগের অপেক্ষায় ওত পেতে বসে থাকেন, কখন ভাড়ায় খাটবেন।’

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং সংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক  সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বিশেষ অতিথি ও ঢাকা ১৯ আসনের এমপি মো. সাইফুল ইসলাম আমন্ত্রিত বক্তার বক্তব্য দেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন