শেষ হলো একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে রাষ্ট্রপতির সমাপনী ঘোষণা পাঠের মধ্যদিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনের সমাপ্তি টানেন। এর আগে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ সমাপনী বক্তব্য দেন।
অধিবেশন শেষে সংসদ সদস্যদের মাঝে বেজে ওঠে বিদায়ের সুর। প্রধানমন্ত্রী যখন উঠতে যাবেন, এমন সময় তার পা ছুঁয়ে সালাম করতে শুরু করেন সংসদ সদস্যরা, এক্ষেত্রে এগিয়ে ছিলেন নারী এমপিরা। কে কার আগে, কত দ্রুত সালাম করবেন এ নিয়ে জটলা বেঁধে যায়। তবে অনেক সিনিয়র নেতা সালাম করতে আসলে তাদের নিবৃত করেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রীত্ব হারানো ডা. মুরাদকেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে দেখা যায়।
এসময় অনেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে হাসিমুখে গল্প করতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রীকে। এরপর শুরু হয় সেলফি তোলার হিড়িক। শুরুটা করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। পরে একে একে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তোলেন।
তবে জাতীয় পার্টির এমপিরা অধিবেশন শেষে কক্ষ ত্যাগ করেন। শুধুমাত্র এমপি বাবলা প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে আসলেও তার সান্নিধ্য মেলেনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সংসদ অধিবেশন কক্ষ। শুরুতে নারী এমপিরা স্লোগানে মুখরিত করলেও সেটিকে আরও জোরালো করেন নেত্রকোনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। তার সঙ্গে স্লোগানে কণ্ঠ মেলান সিনিয়র এমপিরাও।
বর্তমান সংসদ সদস্যদের অনেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে। তাদের জন্য এই সংসদই শেষ সংসদ হতে পারে। এখনো কাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে তা নিশ্চিত করেনি আওয়ামী লীগ। তাই দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে কে আবার এই সংসদে ফিরতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় আছে। সেই সংশয় ও আবার ফিরে আসার প্রত্যাশা ফুটে ওঠে সংসদ সদস্যদের মাঝে। আজ সংসদ অধিবেশন চলার মধ্যেই অনেক সংসদ সদস্যকে নিজ আসন ছেড়ে অন্য সহকর্মীর কাছে গিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। এমন দৃশ্য এর আগেও দেখা গেছে। তবে আজ আবহটা ছিল ভিন্ন। কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি বিদায়ের পর্বটাও সেড়ে ফেলেতে দেখা গেছে।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে একাদশ জাতীয় সংসদ। এ হিসাবে চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। সংসদের মেয়াদ আরও তিন মাসের মতো থাকলেও অধিবেশন আর বসছে না। সংবিধান অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সংসদ নির্বাচনের স্বার্থে মেয়াদের শেষ ৯০দিনের মধ্যে এই বিধানটি সংবিধানেই শিথিল করা হয়েছে। গত ১ নভেম্বর থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিনের কাউন্টডাউন্ট শুরু হয়েছে।