স্থানীয় সরকারের চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নির্বাচনী পরিবেশ ভালো না থাকলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোট বন্ধ করা হবে। এছাড়া কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার প্রার্থীতা বাতিলের হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে দ্বিতীয় ধাপে ইউপি ভোট নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পর্যালোচনা সভায় অনলাইনে অংশ নিয়ে এমন হুঁশিয়ারি দেন সিইসি।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সাহসী ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক যারা আছেন তারা পাশে থেকে সাহস যোগাবেন। অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে কেউ যাতে পার পেয়ে যেতে না পারে, সেজন্য ব্যবস্থা নিতে উৎসাহ দিতে হবে। কোনো রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে তারা আইনের আওতায় আসবে এবং এই জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।’
মাঠপ্রশাসনের উদ্দেশ্যে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ আসলে আমরা তা ফাইল বন্দি করে রাখি না। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হবে। জাতীয় নির্বাচনের থেকে এই নির্বাচন আলাদা। এখানে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়।’
যেকোনো প্রয়োজনে মাঠ কর্মকর্তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত হয়েছি যে, নির্বাচনী পরিস্থিতি দেশব্যাপী ভালো হয়েছে। আটটি বিভাগের মধ্যে ঢাকা এবং খুলনায় উত্তেজনা রয়েছে। তবে খুলনা এখন নিয়ন্ত্রণে এসে গেছে। ঢাকার ব্যাপারে আমরা সচেতন থাকবো। কোন কোন পকেটে এই সমস্যা আছে, এখন থেকে যেনো সেগুলো চিহ্নিত করতে পারি, সে ব্যাপারে তৎপর হতে হবে।’
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে সিইসি বলেন, ‘কোথাও যদি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কোনো কর্মকর্তা যদি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেন, আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা যারা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের কোনো দল, মত, ব্যক্তি বিশেষের প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে না। নিরপক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে ভোটররা যার যার ভোট দিয়ে চলে যাবেন এই রকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রায় সকল দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অর্পিত থাকে। নির্বাচন কমিশনের হাতে প্রায় কিছুই থাকে না। সুতরাং তাঁরা দায়িত্ব পালনের জন্য যেকোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা আমাদের কাছে চাইলে আমাদের কাছ থেকে পাবেন। তবে সব থেকে বেশি সহযোগিতা নিতে হবে মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।’
মাঠ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে সিইসি আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের এসব নির্বাচন সুষ্ঠু এবং ভালো প্রতিনিধি নির্বাচন করা আপনাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব প্রতিনিধিদের নিয়েই বিভিন্ন সময় আপনাদের সভা, সমাবেশ ও কাজ করতে হয়।’
ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথের পরিচালনায় অনলাইন সভায় আরও সংযুক্ত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.), সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বিভাগীয় কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা।