আগামীকাল রবিবার বিকেল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশন শুরু হবে। এর আগে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুরসণ করে অনেকটা নিয়মরার সংসদ অধিবেশন বসলেও এবার সবকিছু স্বাভারিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, করোনার মহামারির কারণে আগের দুটি বাজেট অধিবেশনের কার্যদিবস ছিল খুবই কম। মহামারিকালে সংসদের অন্য অধিবেশনগুলো ছিল সংপ্তি।স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হয়েছিল অধিবেশনগুলো। সংসদ সদস্যরা পালা করে অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। করোনার সংক্রমণ এখনো থাকায় এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অধিবেশন পরিচালিত হবে। তবে এবার সংসদ সদস্যরা চাইলে প্রতি কার্যদিবসে সংসদে যোগ দিতে পারবেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিয়মিত স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সাংবাকিদরাও সংসদ ভবনে গিয়ে অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে সংসদ সদস্য, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের কভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে সংসদ ভবনে স্থাপিত করোনা পরীক্ষা বুথে নমুনা নেওয়া হয়েছে। যাদের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসবে কেবল তারাই সংসদে যেতে পারবেন।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, এবার বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হবে। জাতীয় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ও কার্যসূচী চূড়ান্ত হবে। সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে রবিবার বিকেল ৪টায় কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
করোনাকালে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক স্থগিত ছিল। এই বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণের সরকারের সফলতা নিয়ে সংসদে সাধারণ আলোচনার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগামী ৯ জুন সংসদে আগামী ২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা হবে। এটি হবে অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্দশ বাজেট। বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের পর দুইদিন বিরতি দিয়ে ১২ জুন থেকে সাধারণ আলোচনা শুরু হবে।
আগামী ১৪ জুন সোমবার সম্পূরক বাজেট পাসের পর প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সাধারণ আলোচনা শুরু হবে। আলোচনা শেষে ২৯ জুন অর্থবিল এবং ৩০ জুন মূল বাজেট ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস হবে। বাজেট পাসের পরও ‘গণমাধ্যম কর্মী আইন-২০২২’সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের জন্য অধিবেশন চলতে পারে বলে জানাগেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সংসদে বাজেট পেশের আগে ওইদিন বেলা ১২টায় সংসদ ভবনের কেবিনেট মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদনের পর অর্থ বিলে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ কারণে রাষ্ট্রপতি সেদিন তার সংসদ ভবন কার্যালয়ে অবস্থান করবেন।
অধিবেশনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়। সংসদ ভবন, সদস্য ভবনসমূহ এবং সংসদ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংসদ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ, লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সচল ও সংসদ এলাকার সৌন্দর্য্য বাড়ানো হয়েছে।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতির উন্নতি হলেও অধিবেশনে এসে যাতে কেউ সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময় পার হলেই অধিবেশনে যোগদানের জন্য নমুনা পরীক্ষা করোনা নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে অধিবেশন থাকবে বলে তিনি জানান।