জান্নাতীরা জান্নাতে নিজ গৃহে অবস্থান করবেন। এমন সময় দরজায় কেউ কড়া নাড়বে। দরজা খুলে দেখবেন একজন ফেরেশতা দাঁড়িয়ে।
তিনি বলবেন, “চলো আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার সাথে দেখা করে আসি।”
তিনি তখন খুবই উল্লাসিত হয়ে বের হয়ে এসে দেখবেন, খুব সুন্দর একটা বাহন তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বাহন ছুটে চলবে খুব বিস্তৃত নয়নাভিরাম মাঠ দিয়ে যা স্বর্ণ আর মণিমুক্তা খচিত পিলারের সাজানো।
জান্নাতীরা খুবই পরিতৃপ্তি নিয়ে ছুটবে। এমন সময় আলো দেখবে, আলোর পর আলো, আরো আলো তারপর আরো আলো।
জান্নাতীরা তখন উল্লাসিত হয়ে ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করবেন, “আমরা কি আল্লাহকে দেখছে?”
অতঃপর ফেরেশতা বলবেন, “নাহ্, আমরা সেই পথেই ছুটছি।”
হঠাৎই জান্নাতীরা শুনবেন গায়েবী আওয়াজ-
★ আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল জান্নাহ্ ★
আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা স্বয়ং সালাম দিচ্ছেন জান্নাতীদের।
খুবই আবেগময় হবে সেই মুহূর্তটা!!!
*আল্লাহু আকবার।*
আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’আলার সালাম এর জবাবে তখন জান্নাতীরা বলবেন,
“আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।”
-হে আল্লাহ্! আপনি শান্তিময় এবং আপনার হতে শান্তি উৎসারিত হয়। আপনি বরকতময় হে মহান ও সম্মানের অধিকারী।
তখন আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা জিজ্ঞেস করবেন,
“তোমরা কি খুশী? তোমরা কি সন্তুষ্ট? ”
-ও আল্লাহ্, জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে আমাদের আপনি জান্নাত দিয়েছেন!
আমরা অসন্তুষ্ট হয়ে কি করে!
জান্নাতীরা জবাব দিবেন।
আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা তখন জিজ্ঞেস করবেন,
“তোমাদের আর কী চাই? ”
তখন জান্নাতীরা (ইনশাআল্লাহ্) বলবেন-
-আর কিছু চাইনা।
আল্লাহ্ বলবেন,
-না না। আজতো দেয়ার দেন, আমি আরো দিব বল কি চাও?
তখন জান্নাতীরা (ইনশাআল্লাহ্) সমস্বরে বলে উঠবেন,
– “ও আল্লাহ্, আমরা আপনাকে দেখতে চাই।
আপনাকে দেখিনি কখনো।
আপনাকে আমরা ভালোবাসি।
আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা তখন পর্দা সরিয়ে দেবেন।
সৃষ্টি এবং স্রষ্টা মুখোমুখি এবার। চোখ বন্ধ করে একটু চিন্তা করুন। সারাজীবন দুনিয়াতে যাকে ডেকেছেন। যাকে না দেখে চোখ দুটো অঝোরে কেঁদেছেন। কাউকে না বলা আপনার একান্ত কথাগুলো যাকে বলেছেন। খুব বিপদে কেউ নেই পাশে কেঁদে কেঁদে যাকে বলেছিলেন। পকেট ফাঁকা, ঘরে খাবার নেই, অনিশ্চিত উৎস থেকে খাবারের ব্যবস্থা যিনি করেছেন। কত চাওয়া, মাকে বলেননি, বাবাকেও না, রাতের আঁধারে কেঁদে কেঁদে যাকে বলেছিলেন।
কত অপরাধ করেছি, কেউ দেখেনি। একজন দেখেছেন কিন্তু গোপন রেখেছেন। বারবার ভুল করেছে জেনে মাফ করে দিয়েছেন অদৃশ্য ইশারায় সাবধান করেছেন।
মমতাময়ী মা, আমার আদরের সন্তান, প্রিয়তমা স্ত্রীর ভালোবাসা দিয়ে অদৃশ্য ভালোবাসা আমাকে যিনি ভালোবেসেছেন সবচেয়ে বেশী। সবচেয়ে আপন, সমূহের প্রতিপালকের সম্মুখে…
সাহাবীদের প্রশ্নের জবাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “পৃথিবীতে আমরা যেমন চাঁদকে স্পষ্ট দেখি আমরা আল্লাহ্ সুবহানাহুওয়া তা’য়ালা তেমনি দেখবো ইনশাআল্লাহ।”
এ যে জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামাহ্ ! সুবহানাল্লাহ্ ইয়া আল্লাহ্ – স্বল্পসংখ্যক সেই মহা সৌভাগ্যবানদের তালিকায় আমাদের নামটা যোগ করে দিন।
আমিন