জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও গবেষক ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, আমাদের ধর্ম নিয়ে যারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদ। ইসলাম ব্রড মাইন্ডের। অমুসলিমরা মানবিক দিক থেকে আমাদের ভাই।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় লালমনিরহাট রেলওয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মাঠে তাফসিরুল কুরআন মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাট এ মাহফিলের আয়োজন করে।
আজহারী বলেন, ইসলামে অমুসলিমদের জান মালের নিরাপত্তার বিধান আছে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করে এই বিধান ইসলামে আছে। হাদিস-কোরআনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, যে সব মুসলমান অমুসলিমদের সম্পদ দখল করবে তারা জাহান্নামে যাবে। তাই অমুসলিমদের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে হবে মুসলিম ভাইদের।
মাহফিলে তিনি ইসলামের আলোকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আমরা মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সব মিলিয়ে বাংলাদেশ। আমাদের পারস্পরিক সম্প্রীতি, ভালোবাসা, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ, বোঝাপড়া অনেক মজবুত। আমাদের এই সম্পর্কের মধ্যে মাঝে-মধ্যে ফাটল ধরাতে চায়। আমরা যে সুখে আছি, শান্তিতে আছি, অনেকের ভালো লাগে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা নেই। আমরা ভাই ভাই। কিছু দুষ্টু লোক আছে, তারা আমাদের সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরাতে চায়। মাঝেমধ্যে ঝগড়া লাগাতে চায়। পত্র-পত্রিকায় দেখা যায় বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনায় হামলা চালানো হয়। এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এগুলোতে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নাই। দুর্বৃত্তদের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। সব সময় ঐক্যবদ্ধ থেকে দুর্বৃত্তদের কালো হাত ভেঙে দিতে ১ ঘণ্টাও লাগবে না।
এদিকে মাহফিল উপলক্ষে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন জেলার নারী-পুরুষ জমায়েত হতে শুরু করেন। সকাল থেকে লাখ লাখ জনতার সমাগমে লালমনিরহাট শহর ও তার আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জোহরের নামাজের পর শুরু হয় বয়ান।
আয়োজক কমিটির প্রধান ও মাহফিলের সভাপতি আব্দুল হাকিম জানান, মাহফিলে ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল। মূল প্যান্ডেল ছাড়াও মোট পাঁচটি মাঠ প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। অনেকেই মাঠে ঠাঁই না পেয়ে এলাকায় প্রজেক্টরে দেখেছেন আজহারীর মাহফিল।