English

23 C
Dhaka
রবিবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

‘গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের এই দুর্দিনে গিয়াস কামাল চৌধুরীর প্রয়োজন ছিল’

- Advertisements -

সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরী স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন সত্যিকারের চারণ সাংবাদিক। গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের এই ঘোর দুর্দিনে গিয়াস কামাল চৌধুরীর মত সাংবাদিকের প্রয়োজন ছিল। সাহসের সঙ্গে সত্য ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন করে তিনি যে ঈর্ষনীয় সুখ্যাতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তা বাংলাদেশে বিরল। ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক হিসেবে তিনি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছিলেন। কন্ঠ সাংবাদিকতাকে জনপ্রিয় করে তিনি ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন। মানুষের প্রতি তার দরদ ছিল অপরিমেয়। মানবিক দিক দিয়ে তিনি ছিলেন অনন্য।
আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গিয়াস কামাল চৌধুরীর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। বিএফইউজে ও ডিইউজে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।
বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।
স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজীজ, ডিইউজে’র সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন ও ওবায়দুর রহমান শাহীন, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ খায়রুল বাশার, ডিইউজের সহ-সভাপতি বাছির জামাল ও রাশেদুল হক, সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সাজু, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, বিএফইউজের দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, দৈনিক খবরপত্রের বার্তা সম্পাদক মো. হারুন অর রশীদ, ডিইউজের দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য একেএম মোহসীন ও জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই, রফিক লিটন, আব্দুল হালিম প্রমুখ। দোয়া ও মোনাজাত করেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি ওবাইদুর রহমান শাহীন।
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী বাংলাদেশের সাংবাদিকতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
চারণ সাংবাদিক যাকে বলে সে হলো গিয়াস কামাল চৌধুরী। মানবিক দিক দিয়ে তিনি ছিলেন অনন্য। তিনি স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ভয়েস অব আমেরিকায় সাহসিকতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করে দেখিয়ে গেছেন একনায়কের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কিভাবে কাজ করতে হয়। গণতন্ত্রের জন্যে তিনি আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। এখন স্বৈরশাসন ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারলেই গিয়াস কামাল চৌধুরীর প্রতি সম্মান জানানো হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আজ কেউ সত্য কথা বলতে পারছে না। বললেই তাকে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের কোনো মানুষ আজ নিরাপদে নেই। সাংবাদিকরা আজ নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী বাংলাদেশে কন্ঠ সাংবাদিকতাকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দিতে পেরেছিলেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে মানুষ উন্মুখ হয়ে থাকতো তার কণ্ঠ শোনার জন্য। অসাধারণ মানবিক গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন গিয়াস কামাল চৌধুরী। তিনি মানুষের উপকার করার জন্য, অগণিত মানুষকে চাকরি দেয়া এবং সাহায্য করার জন্য নিরন্তর ছুটে বেড়াতেন। দলমত নির্বিশেষে তিনি এটা করতেন। রাজনীতির প্রতি তার কোন মোহ বা উচ্চাভিলাস ছিল না। ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া তাকে নমিনেশন দেয়ার পরও এমপি হতে রাজি হননি। বহুমুখী প্রতিভা তাকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিতে পরিণত করেছিল। অভাবী ও দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য তিনি ঝাঁপিয়ে পড়তেন। ক্ষুধার্তকে খাবার দিতে ব্যাকুল হয়ে পড়তেন।
নুরুল আমিন রোকন বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবের নেতৃত্বে থেকে দেখিয়ে গেছেন কিভাবে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করতে হয়। আমি তার রূহের মাগফেরাত কামনা করছি।
এম এ আজিজ বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী ছিলেন একজন পরোপকারী মানুষ। তিনি ছিলেন আপোসহীন নেতা। অন্যের উপকারে তিনি সব সময় ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তার কাছে এসে কেউ উপকার না পেয়ে ফিরে যেতো না। তিনি আমাদের গর্ব। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরীর মত সাংবাদিক আমরা আরেকজন খুঁজে পাবো না। তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন দল মতের ঊর্ধ্বে থেকে। এমন কিছু মানবিক গুণাবলী তার মধ্যে ছিল যা সাধারণত দেখা যায় না। তিনি আরো বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করতেন না। তিনি কোন স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষুর কাছে মাথা নত করেননি। বৈরী পরিবেশেও অসাধারণ সাহসিকতায় সাংবাদিকতা করে গেছেন।
আবদুল হাই শিকদার বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী বাংলাদেশের সাংবাদিকতার আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আছেন। সাংবাদিকতা পেশাকে তিনি মহিমান্বিত করেছেন। সারা দেশে তিনি যে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে আজীবন স্মরনীয় হয়ে থাকবে।
ইলিয়াস খান বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক হিসেবে তিনি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছিলেন। কন্ঠ সাংবাদিকতাকে জনপ্রিয় করে তিনি ব্যক্তি থেকে প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন। তার মধ্যে কোনো লোভ-লালসা ছিলনা। তিনি ছিলেন একজন পরোপকারী। তার কর্ম তাকে সারাজীবন আমাদের কাছে আদর্শ হয়ে থাকবে। বাকের হোসাইন বলেন, গিয়াস কামাল চৌধুরী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আমৃত্যু লড়াই-সংগ্রাম করে গেছেন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন