লিটন এরশাদ: আজ ৫ এপ্রিল, ১৯৬৮। প্রাচী ভবন। দিলকুশা (মতিঝিল)। আলমগীর কবিরের উদ্যোগে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন সে সময়ের তেজিয়ান তেজোদ্দীপ্ত ৫ সাংবাদিক। আলমগীর কবির ছাড়া বাকি চারজন হলেন, ওবায়েদ উল হক, এস এম পারভেজ, আজিজ মিসির ও ফজল শাহাবুদ্দিন। গঠিত হলো এ দেশের প্রথম সাংবাদিক সংগঠন, পাকিস্তান চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি। আহবায়ক ওবায়েদ উল হক, বাকি চারজন সদস্য। ১৯ এপ্রিল, ১৯৬৮ গঠিত হলো এই সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
সদস্য ছিলেন ১৯ জন। ওবায়েদ উল হক সভাপতি এবং ফজল শাহাবুদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত এই কমিটিতে ছিলেন এস এম পারভেজ, আলমগীর কবির, আজিজ মিসির, গাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, হুসনা বানু খানম, জয়নুল আবেদীন, শাহার আজিম, শাহজাদ মানজার, আহমদ জামান চৌধুরী, এ টি এম হাই, আকিল পারভেজ, আসির উদ্দিন আহমেদ, গাজী মুঙ্গের, আহমেদ নূরে আলম, নাজিমুদ্দিন মানিক, আজিজুর রহমান নয়ন এবং সেলিম। উল্লেখ করা যেতে পারে যে সেই পরাধীন সময়ে এটাই ছিলো সমগ্র পাকিস্তানের সাংবাদিক সমিতি।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ভাষনের পরই আলমগীর কবির, জহীর রায়হান, এস এম পারভেজ, আসির উদ্দিন আহমেদ সহ আরও কয়েকজন মিটিং করে এই সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে, “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি” রাখেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে এই সমিতির সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেন। এতে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটির সভাপতি হন এস এম পারভেজ।
তিনি আটকে পড়লেও আলমগীর কবির, জহীর রায়হান সহ আরও অনেকেই সরাসরি যুদ্ধে চলে যান এবং সংগঠনের কার্যক্রম দেশ শত্রু মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে আলমগীর কবির সম্পাদিত চলচ্চিত্র বিষয়ক ইংরেজি পত্রিকা ‘সিকোয়েন্স’ এ নিয়মিত লিখতেন জহীর রায়হান। বিজয় অর্জনের পর ডিসেম্বরেই এস এম পারভেজ এঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)” এর সভা।
পরবর্তীতে এই সমিতির যুগান্তকারী সব পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের বিষয় গুলো এখন ইতিহাস। আজ বাচসাসের ৫৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সেই মানুষদের যারা শুরু করেছিলেন সেই ইতিহাস, সঙ্গে থেকে প্রতিপদে এগিয়ে নিয়ে গেছেন সমিতিকে। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাঁদের আত্মার শান্তি প্রার্থনা করছি। সুস্থতা প্রার্থনা করি যারা বেঁচে থাকা এই সমিতির সংগে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছেন তাঁদের সবার।