সাহেরা বেগম, স্বামী ৩২ বছর আগে মারা গেছে। ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে তার সংসার। সম্পদ বলতে ৫ শতক আবাদি জমি ও একটি বসতভিটা বাড়ি। শনিবার দুপুরে বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউপির হাজরাদিঘী দক্ষিণপাড়া একটি ফসলের মাঠে কাটফাটা রোদে পুড়ে ঘেমে একাকার হয়ে জমিতে সার প্রয়োগ করতে দেখা যায় বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সংগ্রামী সাহেরা নামের এক বৃদ্ধা নারীকে। সাহেরার স্বামীর নাম আবুল হোসেন সরদার।
তিনি ৩২ বছর আগে মারা যান। সাহেরা স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে ২ সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে বেঁচে থাকার জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করছেন। মেয়েকে অনেক কষ্টে বিয়ে দিলেও আরেক কষ্ট বাসা বাঁধে সাহেরার ঘাড়ে। যে ছেলে সংসাদের হাল ধরবে সেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। টুকটাক দর্জির কাজ করলেও টাকা রোজগার করতে, সে বুদ্ধিক্ষম তার নেই। সে নিজেও মায়ের আয় রোজগারের ওপর নির্ভরশীল।
ঘোরাধাপ কোল্ড স্টোরের পশ্চিম পার্শে মাঠে কাজ করা সাহেরা বেগমের সাথে কথা বললে সে জনান, মাস খানেক আগে স্বামীর রেখে যাওয়া ৫শতক জমিতে ধানের চারা রোপন করেছি। ভাল মানের ফসল করতে জমিতে সার দিচ্ছি। নারী হয়ে মাঠে কাজ করলে কেউ কিছু বলে না?
এমন প্রশ্নের জবাবে সাহেরা বলেন, নিজের সামান্য জমিতে নিজেই কাজ করছি তা অনেকেই অবাক চোখে দেখে। বাবারে সংসারে খাবার না থাকলে তো কেউ খাওয়ায় না। তবে কাম করতে লজ্জা কিসের। চুরি তো আর করি না।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকার মধ্যে সব থেকে পরিশ্রমী নারী বৃদ্ধা সাহেরা বেগম। ফসল বোনা থেকে শুরু করে মাঠের যাবতীয় কাজ তিনি করতে পারেন।
কখনো অলস সময় পার করেন না। রান্না ঘর থেকে ফসলের মাঠ, সবখানেই কাজ করেন তিনি। এভাবে কৃষি কাজ করে সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরেয়ে এনেছেন সাহেরা। সাহেরার সংগ্রামী জীবনে কিছুটা রেশ দিতে সরকারি অনুদানের সহযোগী কামনা করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।