চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় কৌশলে অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিয়ে বৃদ্ধ মা শেরিনা বেগম (৮৫) ও বাবা দাহারুল ইসলাম (৯০) বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন সন্তানরা। নিরুপায় হয়ে উপজেলার পুকুরিয়া এলাকায় বাল্যকালের বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। খবর পেয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত।
বৃহস্পতিবার (৪ মে) রাত ১০টার দিকে উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে দাহারুল ইসলামের বন্ধু আমিনুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে তাদের খোঁজ নেন ইউএনও আবুল হায়াত।
এর আগে বুধবার (৩ মে) উপজেলার শ্যামপুর শ্যামপুর ইউনিয়নের কামাটোলা বাবুপুর গ্রামে তার নিজ বাড়ি থেকে তাদের বের করে দেন সন্তানরা।
দাহারুল ইসলাম বলেন, আমার সাত ছেলে-মেয়ে। তারা সবাই প্রতিষ্ঠিত। তবে কিছুদিন আগে থেকেই তাদের সঙ্গে আমার মনোমালিন্য চলছিল। এজন্যই তারা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমার বড় ছেলে রায়নুল হক ব্র্যাক ব্যাংকে চাকরি করে, মেজ ছেলে বাগির আলম ভারতের বাসিন্দা, সেজ ছেলে এমরান আলি শাহবাজপুর সোনামসজিদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক, ছোট ছেলে সাইদুর রহমান ব্যবসায়ী।
মেয়েদের মধ্যে মেজ মেয়ে স্কুলের শিক্ষক। তবুও আমাদের জন্য তাদের ভাত জুটলো না।
দাহারুল আরও বলেন, কৌশলে আমার ১৩ বিঘা জমি ও ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সেজ ছেলে এমরান ও ছোট ছেলে সাইদুর। এর পর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এমনকি বাড়ি থেকে আসার সময় আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দুটিও তাদের কাছে আছে। তাই নিরুপায় হয়ে আমার ছোটবেলার বন্ধুর বাড়িতে উঠেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দাহারুলের বড় ছেলে রায়নুল হক বলেন, তারা আমার বাবা-মা। কিন্তু এভাবে আপনাকে এসব কথা বলবো না। আর আপনি আমার মোবাইল নম্বর কোথায় পেয়েছেন? আপনার যা জানার আছে আমার অন্য ভাইয়ের কাছে জেনে নেন।
ভুক্তভোগীর সেজ ছেলে ও সোনামসজিদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক এমরান আলির মোবাইল নম্বরে কল দিলে তার স্ত্রী রিসিভ করেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মোবাইলে কথা সম্ভব নয়। সরাসরি এসে কথা বলেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিব খানের নির্দেশে আমরা ওই বৃদ্ধার কাছে গিয়েছিলাম। তাকে ফলমূল ও নগদ কিছু অর্থ দিয়েছি। এছাড়া থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছি। জন্মদাতা মা-বাবাকে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে থাকবে।