সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, ১৯৭৫ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত ছিল। তাদেরকে এ বিষয়ে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। সেই ২১ বছর জাতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে কমপক্ষে ৪২ বছর সময় লাগবে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিশেষ করে বিগত ১২ বছরে (২০০৯ হতে ২০২০ পর্যন্ত) এ অবস্থার অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
নতুন প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবদান, তাঁর জীবন ও কর্ম এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছে। আর এ বিষয় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে বই সংশ্লিষ্ট আলোকিত মানুষজন- লেখক, প্রকাশক, বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে বইপ্রেমী সাধারণ জনগণ। সেজন্য নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দিতে লাইব্রেরির বিকল্প নেই।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে জাতির পিতার জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ‘জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র’ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তিনদিনব্যাপী পুস্তক প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, একটি কথা প্রচলিত আছে যে বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী সেনা সদস্যদের দ্বারা নিহত হয়েছেন যা সর্বৈব মিথ্যা। প্রকৃত সত্য হলো, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির পরিকল্পনা ও চক্রান্তে এবং জিয়াউর রহমানের মদদে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। প্রতিমন্ত্রী এসময় মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার-আলবদর কর্তৃক নিজের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আবুবকর সিদ্দিক ও ৭১ টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু। স্বাগত বক্তৃতা করেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর। আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী।
প্রতিমন্ত্রী এর আগে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অধীনস্থ সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে ‘ব্রেইল কর্ণার’ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনকালে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আবুবকর সিদ্দিক এবং স্পর্শ ফাউণ্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি নাজিয়া জেবীনসহ গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ‘ব্রেইল কর্ণার’টি স্থাপনে সহযোগিতা প্রদান করেছে ‘স্পর্শ ফাউণ্ডেশন’ যারা দীর্ঘদিন থেকে দৃষ্টিজয়ী মানুষের সেবায় কাজ করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবসকে সামনে রেখে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর কর্তৃক এ কর্ণারটি স্থাপন করা হয়েছে।