সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়কালে তরুণ কবিরা রবীন্দ্রনাথের সৌন্দর্য-চেতনার বিপরীতে কবিতায় যুদ্ধ-পরবর্তী বিমর্ষ পৃথিবীর রূপ তুলে ধরার প্রয়াসী হয়েছিলেন। সেই সময়ে আধুনিক যুগমানসের সকল ক্ষেত্রে যখন নাগরিক জীবন স্থান করে নিচ্ছিলো, তখন জসীম উদ্দীন বলিষ্ঠকণ্ঠে গেয়ে ওঠেছিলেন লোকজীবনের জয়গান। তাঁর কাব্যের পটভূমি ও উপজীব্য ছিল পল্লীজীবন। তাঁর কাব্যভাবনা ছিল দেশীয় পরিমণ্ডল-আশ্রিত, তাঁর মধ্যে ছিলো বিষয়বস্তুর স্বাতন্ত্র্য। রবীন্দ্র-পরিমণ্ডলে থেকেও কাব্যের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের জন্য আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায় কবি জসীম উদ্দীনকে।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত ‘বাংলা কবিতার আবহমান ধারায় কবি জসীম উদ্দীন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের কবিতার রয়েছে হাজার বছরের অধিক সময়ের ঐতিহ্য। অনুমান করা হয় নবম-দশক শতকের চর্যাপদ বাংলা কবিতার প্রথম নিদর্শন।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জসীম উদ্দীন ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক। তিনি স্মরণীয় আছেন কবিতায় লোকজ উপকরণ ব্যবহারের জন্যই শুধু নয়, লোকমানসের ভাব-ভাষা-কল্পনাপ্রবণতা ও মেজাজকে যথার্থভাবে বুঝতে পেরেছিলেন বলেই। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, লোকাচার, লোকমানসের বিভিন্ন অনুষঙ্গ জসীম উদ্দীনের চেতনায় যে প্রভাব ফেলেছে, তা-ই প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কাব্যে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক বিমল গুহ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি।