কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন- এর জন্ম ২৭ ডিসেম্বর। ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার বিক্রমপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গল্প ‘প্রশ্ন’ তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম প্রগতিশীল সাপ্তাহিক ‘যুগের দাবীতে’ ছাপা হয়। পুস্তকাকারে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘মধুমতি’। তিনি তৎ সময় শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতার সঙ্গেও দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন।
ইত্তেফাক, সিনেমা পত্রিকা ছাড়াও তাঁর নিজস্ব সম্পাদনায় পঞ্চাশ দশকে প্রকাশিত হয়েছে ‘অঙ্গনা’ নামের একটি মহিলা মাসিক পত্রিকা। তাঁর প্রকাশিত পুস্তকের সংখ্যা একশ‘রও বেশী। তদমধ্যে রয়েছে উপন্যাস, গবেষণাধর্মী রচনা, ছোটগল্প, ধর্মীয় কাহিনী, ভ্রমণ কাহিনী, কিশোর উপন্যাস, স্মৃতিকথা ইত্যাদি। রেডিও, টিভিতে প্রচারিত হয়েছে অসংখ্য নাটক, জীবন্তিকা ও সিরিজ নাটক। তাঁর গল্পে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে কয়েকটি। সহিত্য নির্ভর ছোটগল্প ও উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ণ হয়েছে প্রেসিডেন্ট (১৯৬৬), কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি (২০০৩), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ধ্রুবতারা (২০০৬), মধুমতি (২০১১) ইত্যাদি।
সাহিত্যচর্চার জন্য পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসরকারি পুরস্কার স্বাধীনতা পদক (২০১৭), একুশে পদক (১৯৯৩), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৩), নাসিরুদ্দিন স্বর্ণ পদক (১৯৯৫), হূমায়ূন আহমেদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯), কমর মুশতারী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৪), বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯৪), শের-ই-বাংলা স্বর্ণ পদক (১৯৯৬), ঋষিজ সাহিত্য পদক (১৯৯৮), লায়লা সামাদ পুরস্কার (১৯৯৯) ও অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৯)। ছোট গল্পের জন্য পেয়েছেন নাট্যসভা পুরস্কার (১৯৯৮), সায়েন্স ফিকশন ও কিশোর উপন্যাসের জন্য পরস্কৃত হয়েছেন শাপলা দোয়েল পুরস্কার (১৯৯৬), অতীশ দীপঙ্কর পুরস্কার (১৯৯৮), ইউরো শিশু সাহিত্য পুরস্কার (২০০৩)। টিভি নাটকের জন্য পেয়েছেন টেনাসিনাস পুরস্কার (১৯৯৭), বাচসাস -বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টাস এসোসিয়েশন মিলেনিয়াম এ্যাওয়ার্ড (২০০০), টেলিভিশন রিপোর্টাস এ্যাওয়ার্ড (২০০০)সহ তিনি এ যাবত অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন।
এই খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি কোটি ভক্তকে কাদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে রাবেয়া খাতুন স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে দুস্থ্য শিশুদের মাঝে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হবে চ্যানেল আই চত্বরে।