বর্ষায় পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এছাড়া বাতাসে আর্দ্রতার ফলে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাল সংক্রমণের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি খেলায় তাপমাত্রায় তারতম্য হয়। তাপমাত্রার এমন উত্থান-পতন আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। এর ফলে সর্দি-কাশি বা গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা লেগেই থাকে।
বর্ষার এই সময়ে যেসব খাবার খেলে প্রতিকূল আবহাওয়াতেও ঠিক থাকবে আপনার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, সেসব খাবারের কথা জানাতেই এই লেখা।
১. আদা
আদায় প্রদাহবিরোধী এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। বর্ষায় খাদ্যতালিকায় আদার উপস্থিতি বাড়ালে শরীরে প্রদাহের পরিমাণ অনেক কমে আসবে। এর শরীরে ইনফেকশনের সম্ভাবনাও হ্রাস পাবে।
২. হলুদ
প্রদাহ দূর করায় হলুদের জুড়ি নেই। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন নামের এক উপাদান, যার ফলে ইনফেকশন এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি পায় শরীর। দুধ, সবজি কিংবা স্যুপের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে গ্রহণ করতে পারেন।
৩. রসুন
রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামের এক উপাদান, যা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। শরীরে সাদা রক্তকণিকা তৈরির মাধ্যমে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় রসুন।
৪. সাইট্রাস ফ্রুটস
কমলা, লেবু এবং জাম্বুরার মতো সাইট্রাস ফ্রুটসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এর মাধ্যমেও শরীরে সাদা রক্তকণিকা তৈরি হয়। ভিটামিন সি শরীরে নতুন কোষ তৈরিতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি পুরোনো কোষ সারিয়ে তুলতেও ভূমিকা রাখে।
৫. ইয়োগার্ট
ইয়োগার্টে রয়েছে উপকারী ব্যাকটেরিয়া যা পাকস্থলীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। পেট ঠিক থাকলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকে। বাড়তি স্বাদের জন্য ফল বা মধুর সঙ্গে ইয়োগার্ট খেতে পারেন।
৬. কাজুবাদাম
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ই জোগান দেয় কাজুবাদাম। স্মুথি বা ওটমিলের সঙ্গে আপনার ডায়েটে কাজুবাদাম রাখলে তা বর্ষায় আপনার সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
৭. শাক
শাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বেটা ক্যারোটিন রয়েছে, যা ইনফেকশনের সঙ্গে লড়াইয়ে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়া শাকে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এবং ই’ও রয়েছে।
৮. গ্রিন টি
গ্রিন টি’র উপকারের কথা কে না জানে! ওজন কমানো থেকে শুরু করে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে গ্রিন টি। এই চায়ে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যার নাম ফ্লাভোনয়েডস, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। তাই দিনে অন্তত দুই-তিন কাপ গ্রিন টি পান করতে পারেন।
৯. পেঁপে
ভিটামিন সি’র অন্যতম উৎস পেঁপে। এটা প্রদাহ দূর করে খাবার হজমের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়া পেঁপে’তে থাকা ভিটামিন এ ও ই-ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।
১০. মাশরুম
মাশরুমে রয়েছে বেটা গ্লুকান নামক উপাদান, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য প্রয়োজনীয় বি ভিটামিন এবং সেলেনিয়ামেরও অন্যতম উৎস মাশরুম।