তরকারি রান্না পেঁয়াজ ছাড়া চিন্তাই করা যায় না। মসলা হিসেবে খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি পেঁয়াজের রয়েছে অসংখ্য উপকারিতাও। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ পেঁয়াজ।
কীভাবে পেঁয়াজ খেলে উপকারিতা বেশি মেলে
পেঁয়াজ খেতে পারেন রান্না করে, আবার কাঁচা হিসেবে খেতে পরেন সালাদ বা স্যান্ডউইচেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেঁয়াজ কাঁচা খেলেই উপকার পাবেন বেশি। যদিও রান্না করে খাওয়াটা ক্ষতিকর নয়, তবে কাঁচা খেলে অক্ষুণ্ণ থাকে সব পুষ্টিগুণ। তেলে হালকা ভেজেও খাওয়া যায় উপকারী পেঁয়াজ।
পেঁয়াজ খাওয়ার উপকারিতা
- পেঁয়াজ ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস। এই ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তনালী ও শরীরের অন্যান্য অংশ গঠনে সাহায্য করে। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি খাওয়ার পরামর্শ দেন। একটি গড় আকারের পেঁয়াজ দৈনন্দিন ভিটামিন সি চাহিদার ৯ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে পারে।
- পেঁয়াজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়। লাল পেঁয়াজে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি থাকে।
- ডায়াটারি এবং প্রিবায়োটিক ফাইবারের উৎস পেঁয়াজ। ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত মলত্যাগ করতে সহায়তা করে। পেঁয়াজের প্রিবায়োটিক ফাইবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক) বাড়াতে সাহায্য করে।
- পেঁয়াজে রয়েছে কোয়ারসেটিন যা একটি ফ্ল্যাভোনয়েড বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। উপাদানটির প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
- পেঁয়াজ শরীরকে ভিটামিন ই তৈরি করতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন বি৬ এর উৎস পেঁয়াজ। একটি মাঝারি আকারের পেঁয়াজে দৈনন্দিন ভিটামিন বি৬ চাহিদার ৮ শতাংশ রয়েছে। এই ভিটামিন শরীরকে লাল রক্ত কণিকা গঠনে সাহায্য করে। এটি প্রোটিনকেও ভেঙে দেয়।
- পেঁয়াজের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সর্দি-কাশির ভেষজ ওষুধ হিসেবে যুগ যুগ ধরে পেঁয়াজ ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
- প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব রয়েছে পেঁয়াজের। পেঁয়াজে থাকা কোয়ারসেটিন রক্তচাপ কমিয়ে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- অ্যাজমা এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগের উপশমে পেঁয়াজের অবদান রয়েছে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় বলছে, পেঁয়াজে থাকা যৌগগুলো শ্বাসনালী মসৃণ ও পেশীকে শিথিল করতে পারে। এতে অ্যালার্জিজনিত হাঁপানি এবং ফুসফুসে প্রদাহ কমে।
- খাদ্যতালিকায় পেঁয়াজ রাখলে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয় বলে কিছু গবেষণা মত দিয়েছে। টাইপ ১ এবং ২ ডায়াবেটিস রোগীদের উপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম কাঁচা লাল পেঁয়াজ খেলে চার ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।