নাসিম রুমি: ডিম হলো একটি প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর খাদ্য, যা প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। তবে ডিম খাওয়ার পদ্ধতি এবং উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলে সাধারণত ডিম সেদ্ধ এবং ডিম ভাজির মধ্যে তুলনা করা হয়। আসুন দেখি কোনটি বেশি উপকারী এবং তাদের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত।
ডিম সেদ্ধ
ডিম সেদ্ধ করার পদ্ধতিতে ডিমকে পানি দিয়ে সেদ্ধ করা হয়। এতে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে
প্রোটিন: সেদ্ধ ডিমে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি। একটি বড় সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬-৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে।
ভিটামিন এবং মিনারেল: সেদ্ধ ডিমে ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, ফোলেট, সেলেনিয়াম, এবং ফসফরাস পাওয়া যায়। এগুলো শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয়।
কম তেল ও ক্যালোরি: সেদ্ধ ডিম তৈরির জন্য তেল ব্যবহার করা হয় না, ফলে এতে অতিরিক্ত ক্যালোরি ও ফ্যাট নেই। এক সেদ্ধ ডিমে প্রায় ৬৮-৭৭ ক্যালোরি থাকে।
হজমে সুবিধা: সেদ্ধ ডিমের প্রোটিনগুলো হজমে সহজ, যা শরীরের পুষ্টির শোষণে সহায়তা করে।
রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: গবেষণায় দেখা গেছে, সেদ্ধ ডিম খেলে রক্তে লিপিড প্রোফাইল উন্নত হয় এবং এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
ডিম ভাজি
ডিম ভাজি করার পদ্ধতিতে ডিমকে তেলে ভাজা হয়, যা অনেকের জন্য জনপ্রিয় একটি খাবার। এর কিছু উপকারিতা হলো:
স্বাদ ও বৈচিত্র্য: ভাজি ডিম বিভিন্ন ধরনের মশলা, সবজি, বা পনিরের সাথে তৈরি করা যায়, যা স্বাদে বৈচিত্র্য আনে এবং অন্যান্য পুষ্টির উপাদান যোগ করে।
পুষ্টি বৃদ্ধি: যদি ভাজি ডিমে সবজি (যেমন, পেঁয়াজ, মরিচ, পালং) যোগ করা হয়, তবে এতে আরও বেশি ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া যাবে।
শক্তি বৃদ্ধি: ভাজি ডিমে তেলের কারণে কিছু ক্যালোরি বাড়ে, যা দেহে শক্তি যোগ করে। তবে, অতিরিক্ত তেল ব্যবহারে ক্যালোরি বৃদ্ধি নাও হতে পারে।
হজমে সহায়ক: কিছু লোকের জন্য ভাজি ডিম সহজে হজম হয়, বিশেষত যারা দ্রুত এবং বেশি পুষ্টির প্রয়োজন অনুভব করেন।
ডিম সেদ্ধ এবং ডিম ভাজির মধ্যে পুষ্টিগুণের দিক থেকে সেদ্ধ ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর। এটি বেশি পুষ্টি সংরক্ষণ করে, কম ক্যালোরি এবং ফ্যাট থাকে। তবে, ভাজি ডিম স্বাদের জন্য এবং বিভিন্ন পুষ্টির উপাদান যোগ করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
সর্বোপরি, আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা অনুসরণ করতে চান, তবে সেদ্ধ ডিম বেশি উপকারী হবে। তবে সময়-সময়ে ভাজি ডিম খাওয়াও হতে পারে, বিশেষ করে স্বাদের জন্য। আপনার স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে সঠিক পদ্ধতি বেছে নিন।