English

16 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

কিডনির পাথর দূর করার ৫টি প্রাকৃতিক উপায়

- Advertisements -

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। যদিও এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যা; তবুও এটি কারও কারও ক্ষেত্রে মারাত্মক হতে পারে। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক কিডনিতে পাথর জমে কীভাবে? আর এই পাথরগুলো আসলে কী?

কিডনিতে যে পাথরগুলো জমে; সেগুলেকে রেনাল পাথর বা নেফ্রোলিথিয়াসিস বলা হয়। কঠিন বর্জ্য পদার্থ দিয়ে গঠিত হয় এই পাথরগুলো। ক্যালসিয়াম অক্সালেট, স্ট্রুভাইট, ইউরিক অ্যাসিড এবং সিস্টাইন মিলে কিডনির পাথরগুলো তৈরি হয়।

যদিও কিডনিতে ছোট ছোট পাথর জমা খুব জটিল সমস্যা নয়, তবে বড় পাথরগুলো মূত্রনালীতে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। কিডনিতে অত্যাধিক পাথর জমলে রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। যেমন- পেটে ব্যথা, বমিসহ রক্তপাতও হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১২ শতাংশ পুরুষ এবং ৫ শতাংশ নারী তাদের জীবদ্দশায় কিডনিতে পাথর জমার সমস্যায় ভুগে থাকেন। গবেষণায় আরও জানা যায়, একবার কিডনিতে পাথর জমলে ৫-১০ বছরের মধ্যে আরও পাথর তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রাথমিক অবস্থায় কিডনিতে পাথর ধরা পড়লে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের মাধ্যমে জটিলতা কমানো যায়। সেইসঙ্গে প্রাকৃতিক কয়েকটি উপায় অনুসরণ করলে কিডনিতে পাথর তৈরির অশঙ্কা অনেকটা কমানো যায়।

যদি কারও কিডনিতে পাথর থাকে তবে এ উপায় অনুসরণ করলে প্রস্রাবের সঙ্গে পাথর বের হয়ে যায়। জেনে নিন ৫টি প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে-

হাইড্রেটেড থাকুন

কিডনি ভালো রাখতে প্রচুর পানি পান করার বিকল্প নেই। ঠিক তেমনই, পর্যাপ্ত পানি পান করলে কিডনিতে জমা পাথর প্রস্রাবের মাধমে বের হয়ে যায়। তবে কফি, চা, বিয়ার, ওয়াইন, কমলার রস, কোমল পানীয় ইত্যাদি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মিষ্টিজাতীয় কোমল পানীয়তে ফ্রুক্টোজ থাকে, যা ক্যালসিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

সাইট্রিক অ্যাসিড গ্রহণ করুন

সাইট্রিক অ্যাসিড একটি জৈব অ্যাসিড। যা অনেক ফল এবং সবজিতে পাওয়া যায়, বিশেষ করে সাইট্রাস ফলে। লেবুতে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় সাইট্রিক অ্যাসিড। সাইট্রিক অ্যাসিড দুটি উপায়ে কিডনি পাথর প্রতিরোধ করতে পারে-

এক, প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে, নতুন পাথর গঠনের ঝুঁকি কমাতে পারে। দুই, পাথর বড় হওয়া রোধে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্ফটিকগুলোর সঙ্গে আবদ্ধ থাকে। এজন্য আপনার ডায়েটে বেশি সাইট্রিক অ্যাসিড পাওয়া যায় এমন ফল যেমন- আঙ্গুর, কমলা, আমলকি, লেবু ইত্যাদি যোগ করুন।

অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার কম খান

অক্সালেট (অক্সালিক অ্যাসিড) একটি অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্ট, যা উদ্ভিদজাতীয় অনেক খাবারে পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে শাক, ফল, সবজি এবং কোকো। এ ছাড়াও শরীর অনেকটাই অক্সালেট নিজেই উত্পাদন করে।

শরীরে যখন অক্সালেটের পরিমাণ বেড়ে যায়; তখন প্রস্রাবে অক্সালেট নির্গমন বৃদ্ধি পায়। যা ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্ফটিক গঠনের প্রবণতা বাড়ায়।

অক্সালেট ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজগুলো একসঙ্গে হয়ে তখন কিডনিতে পাথর জমাতে সাহায্য করে। এজন্য প্রাথমিক অবস্থায় কিডনিতে পাথর ধরা পড়লে, চিকিৎসকরা অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার কমাতে বলেন।

ভিটামিন সি বেশি খাওয়া যাবে না

গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি (অ্যাসকরবিক অ্যাসিড) সম্পূরকগুলো কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণ করলে প্রস্রাবে অক্সালেটের নিঃসরণ বাড়তে পারে। কারণ কিছু ভিটামিন সি শরীরে অক্সালেটে রূপান্তরিত হতে পারে।

মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক পুরুষদের নিয়ে করা সুইডিশ গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভিটামিন সি বেশি খান; তাদের কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ হতে পারে। তবে সব ধরনের ভিটামিন সি ঝুঁকির কারণ নয়। যেমন- লেবু খাওয়া যেতে পারে।

পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন

কিডনির পাথর ক্যালসিয়াম দ্বারা তৈরি হয় বলে অনেকেই মনে করেন, ক্যালসিয়াম গ্রহণ কমাতে হবে। এই ধারণা ভুল। বরং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। দুগ্ধজাত দ্রব্য যেমন- দুধ, পনির এবং টকদই ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস ।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়ামের দৈনিক চাহিদা হলো ১০০০ মিলিগ্রাম। অন্যদিকে ৫০-৭০ বয়সীদের জন্য ১২০০ মিলিগ্রাম। তাই দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে হবে সবাইকে।

প্রাণীজ প্রোটিন কম খান

প্রাণীজ প্রোটিন উৎস যেমন- মাছ-মাংস ও দুগ্ধজাতীয় খাবার বেশি খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণীজ প্রোটিন গ্রহণে উচ্চ পরিমাণে ক্যালসিয়াম নিঃসরণ বাড়তে পারে এবং সাইট্রেটের মাত্রা কমতে থাকে।

সেইসঙ্গে পশুর প্রোটিনের উৎসগুলো পিউরিনে সমৃদ্ধ। এই যৌগগুলো ইউরিক এসিডে ভেঙে যায় এবং ইউরিক এসিড পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে পশুর কিডনি, লিভার এবং অন্যান্য অংশের মাংসে পিউরিনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে।

অন্যদিকে উদ্ভিদজাতীয় খাদ্যে এই পদার্থ কম থাকে। তাই কিডনিতে পাথর জমতে শুরু করলে প্রাণীজ প্রোটিন কম খেতে হবে। তাহলে শরীরও সুস্থ থাকবে আর কিডনিও ভালো থাকবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন