তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হুল ফোটানো বিপজ্জনক না-হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে এগুলো থেকে অ্যালার্জি পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। আবার কিছু কিছু মৌমাছির বিষ বিপজ্জনক। বড়দের তুলনায় শিশুদের মৌমাছি কামড়ালে প্রতিক্রিয়া হয় বেশি। তবে হঠাৎ মৌমাছি কামড়ালে দিশাহারা হয়ে যাবেন না। তাৎক্ষনিক জ্বলুনি কমানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদান। মৌমাছির হুল খুবই বিষাক্ত, তাই ব্যথা ও জ্বলুনি কমার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
জেনে নিন মৌমাছি কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে কী করবেন-
মৌমাছির হুল ফুটিয়ে বসে থাকলে তা তুলে ফেলুন। এরা সাধারণত ত্বকের সঙ্গে একই সমতলে আঁকড়ে ধরে থাকে। তাই সরানোর জন্য ধীরে ধীরে এদের ওপরে এবং পাশে আঙুল বোলান, তারপর আচমকা ঠেলে ফেলে দিন।
খামচে বা চিমটি কেটে মৌমাছিকে তোলার চেষ্টা করবেন না। কারণ এর ফলে বিষের থলি থেকে সমস্ত বিষ বেরিয়ে পড়বে এবং হুলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করবে। তাই খামচে তোলার পরিবর্তে ঠেলে ফেলে দিন।
মৌমাছির কামড়ে জ্বালার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত বের হলে আক্রান্ত স্থানে বরফ চেপে ধরুন। এতে রক্ত বন্ধ হবে ও ব্যথা কমবে।
কিছুক্ষণ ঠান্ডা সেঁক দেওয়ার পর সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম লাগান।
এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারে যদি আপনার ত্বকে ফুসকুড়ি না ওঠে তবে আক্রান্ত স্থানে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন এটি।
মৌমাছির কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। আক্রান্ত স্থানে টুথপেস্ট লাগিয়ে রাখুন আধা ঘণ্টা। জ্বলুনি কমার পাশাপাশি মৌমাছির বিষও দূর করবে এটি।
মৌমাছি কামড়ালে তুলসি পাতার রস, ইউক্যালিপটাস তেল লাগালে স্বস্তি পাবেন। আবার অ্যালোভেরা জেলও শীতলতা প্রদান করতে পারে। অ্যালোভেরায় উপস্থিত অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ব্যথা, চুলকানি, ফোলা ও জ্বালা ভাব কম করে।
বেকিং সোডার পেস্ট ও ভিনেগার একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকের যেখানে মৌমাছি কামড়েছে সেখানে লাগান। আধা ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। মৌমাছির হুলের বিষ দূর করবে এটি। এই ভিনিগার বিষের অ্যাসিড নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তুলোয় ভিজিয়ে এই ভিনিগার ক্ষত স্থানে লাগাতে পারেন।
বাগানে কাজ করছেন এমন সময় মৌমাছি আক্রমণ করেছে? সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা মাটি পানির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে লাগিয়ে নিন আক্রান্ত স্থানে। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
তুলার বল মধুতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে চেপে ধরুন। ধীরে ধীরে ব্যথা ও জ্বালা কমে যাবে।
মৌমাছি কামড়ালে কয়েকটি রসুন ছেঁচে আক্রান্ত স্থানে লাগান। একটি টাওয়েল পেঁচিয়ে নিন ওপরে। আধা ঘণ্টার মধ্যে কমে যাবে জ্বালা।
মৌমাছি কামড়ালে ওই জায়গায় মধু লাগান। মধু বিষকে তরল করে দেয়। মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান সংক্রমণের ঝুঁকি কম করে। সামান্য মধু লাগিয়ে তা শুকোতে দিন। তার পর ঈষদুষ্ণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন। হলুদ ও মধু এক সঙ্গে মিশিয়েও লাগানো যেতে পারে।
চন্দন ও হলুদ গুড়োও মৌমাছির কামড়ের কার্যকরী উপায়। চন্দন জ্বালা ভাব শান্ত করে, আবার হলুদ চুলকানো ও ফোলা ভাব কমায়। চন্দন ও হলুদের পেস্ট প্রভাবিত স্থানে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
হুল ফোটানোর কারণে অনেকের মাথা ব্যথা, বমি, শ্বাসকষ্ট হয়। আবার প্রভাবিত স্থান চুলকাতে পারে, চাকা হয়ে ফুলে যেতেও পারে। এমনকি শরীর ফুলে যাওয়া ও পেটে তীব্র ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।