শীতে গুড় ছাড়া যেন পিঠা-পায়েস তৈরিই হয় না। গুড়ের স্বাদে সবাই মুগ্ধ। প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে ব্যবহার করা হয় গুড়কে। খাবারে স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি গুড়ের আছে আরও একাধিক উপকার।
মূলত চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় গুড়। যা স্বাদেও ভিন্ন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। একাধিক পুষ্টি উপাদান আছে গুড়ে।
ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান গরিমা গোয়েরেলের মতে, আখের রস থেকে গুড় ও চিনি উভয়ই তৈরি হয়। যদিও উভয়ের প্রক্রিয়াকরণ তৈরিতে ভিন্ন। উপকারের কথা আসলে অবশ্যই গুড়ের উপকারিতা চিনির চেয়েও বেশি।
গুড় একটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক শর্করা, যা প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়। ফলে গুড় খেলে রক্তশূন্যতার সমস্যা কমে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক ও সেলেনিয়াম থাকে।
গরিমা গোয়েল আরও জানান, পাকস্থলীতে গুড়ের শোষণ খুব ধীরগতিতে হয়। ফলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে। অন্যদিকে চিনি দ্রুত শোষিত হয় ও অবিলম্বে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
এ কারণেই গুড় হলো একটি জটিল চিনি, যাতে সুক্রোজ অণুগুলো চেইনে থাকে। অন্যদিকে গুড়ের মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি খনিজ, ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, গুড়ের অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বৈশিষ্ট্য আছে। যা হাঁপানি, সর্দি- কাশি ও বুকের শক্তভাব হওয়ার সমস্যা সারায়।
এছাড়া গুড়ে থাকা আয়রন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে ও শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গুড়ে থাকে প্রাকৃতিক মিষ্টি। শীতকালে গুড় খেলে শরীর গরম থাকে।
হজমের জন্যও উপকারী গুড়। শীতকালে অনেক সময় বেশি খাওয়া-দাওয়া হলে হজমের সমস্যা বাড়ে। গুড় এই সমস্যা দূর করে। গুড়ে আছে অ্যান্টি অ্যালার্জির উপাদান। যা শ্বাসযন্ত্রের জন্যও উপকারী।
প্রাকৃতিক মিষ্টির পাশাপাশি এতে আছে উচ্চ ক্যালোরি। যা এনার্জি বাড়াতে সাহায্য করে। জয়েন্টের জন্যও উপকারী গুড়। এতে আছে জিঙ্কের মতো মিনারেল।
যা জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে পারে। এছাড়া গুড়ে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শীতে ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। সামগ্রিকভাবে ত্বককে ভালো রাখে। তাই নিয়মিত স্বল্প পরিমাণে গুড় খেলে আপনি উপকৃত হবেন।