English

28 C
Dhaka
রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
- Advertisement -

যেভাবে ট্রমা থেকে মুক্তি পেতে পারেন

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

ট্রমাটিক এক্সপেরিয়েন্স অনেক মানুষের জীবনেই থাকতে পারে। ট্রমা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ছোটবেলার কোনো একটি ঘটনা যা মনের খুব গভীরে আঘাত করেছে, সেখান থেকেই শুরু হতে পারে ট্রমাটিক এক্সপেরিয়েন্স। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মানুষসৃষ্ট কারণে হতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে অনেক কারণ রয়েছে। আর মানবসৃষ্ট কারণেও অনেকের ট্রমা হয়। এই আঘাতগুলো এমন পর্যায়ে চলে যায়, যেটা পরবর্তীতে এক বিশাল আকার ধারণ করে। মানসিক এবং শারীরিক দুইভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।

দুর্ঘটনা বা ট্রমার কারণে প্রতি বছর বহু মানুষের মৃত্যু হয়। সারা জীবনের জন্য শারীরিক বা মানসিক কারণে অক্ষমও হয়ে যান অনেকে। এসব ক্ষেত্রে পরিবার পরিজনের প্রপার সাপোর্ট ও সাহস পেলে সহজেই বের হয়ে আসা যায়। একজন মানুষ নিজে যে ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছেন, এটি আইডেন্টিফাই করা সবচেয়ে বড় ব্যাপার। আইডেন্টিফাই করতে পারলেই এর সমাধান বা ট্রিটমেন্ট সম্ভব।

ট্রমার কয়েকটি ধরন রয়েছে। এর মধ্যে একটি ধরন হলো পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডার যা মূলত সামাজিক প্রবলেমের কারণে হতে পারে। হয়তো যুদ্ধ ফেরত যাত্রী যারা এমন কিছু ভায়লেন্স দেখেছে যেগুলো মস্তিষ্ক থেকে সরাতে পারছে না, শক সিন্ড্রোমে চলে গেছে। ইংরেজিতে এই ডিসঅর্ডারকে ‘শক শেল্ড’ বলা হয়। এই ধরনের ক্ষেত্রে রোগীরা অনেক সময় ঘুমোতে পারে না, চোখের সামনে রক্ত বা কোনো সহিংস ঘটনা ভাসতেই থাকে। পরে এই সব থেকে মারাত্মক লেভেলের প্যানিক এটাকের সৃষ্টি হয়।

এ ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে সাইকোটিক থেরাপি খুব কাজে দেয়। খুব দ্রুত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের শরণাপন্ন হতে হবে। সাইকোলজিস্ট যদি ভিক্টিমের সঙ্গে সঙ্গে তার পরিবারকেও কাউন্সেলিং করতে পারে, তাহলে সব থেকে ভালো হয়। বেশির ভাগ সময় পরিবারের মানুষরা নিজেরাই এই ডিস্ট্রেস ও ডিস-অর্ডারের কারণ হয়ে দাঁড়ায় অথচ নিজেরাও বুঝতে পারে না পরিবারের ওই ভিক্টিম কি ফেইস করছে।

ট্রমার কয়েকটি ধরনের মধ্যে একিউট ট্রমা, ক্রোনিক ট্রমা, চাইল্ড হুড ট্রমা রয়েছে। এই ট্রমাটিক ডিস-অর্ডারের প্রভাবে প্রত্যেক ভিক্টিম আলাদা আলাদাভাবে রিয়েক্ট করে। কেউ খুব সহজে এর থেকে বের হয়ে আসতে পারে বিভিন্ন একটিভিটিজের মাধ্যমে, যেমন ইয়োগা, জিম, হার্ড কোর এক্সারসাইজ ইত্যাদি। আবার অনেকে বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিজে নিজেকে যুক্ত করে ফেলে, আলাদা জগত আলাদা ক্লাব করে ফেলে, তাতে এই মানসিক এবং ব্রেইনের ডিস্ফাংশান থেকে মুক্তি পায়। আবার অনেকে এই ধরণের বাইরের একটিভিটিজের সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত হতে পারে না, আর তাই সারাক্ষণ পরিবারের সাহচর্য খোঁজে।

ট্রমা কাটানোর উপায়:

ট্রমা থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক সম্পর্কে। এসব ক্ষেত্রে ব্রেইনের ফাংশান বোঝা, সাইকিয়াট্রিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে খোলাসা আলোচনা, কাউন্সেলিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা সামাজিক ও পারিবারিক পর্যায়ে অনেক বেশি দরকার। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, সবুজের নিবিড়ে বেড়ে ওঠা, ডিভাইস ও ভিডিও গেইম, সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি থেকে দূরে থাকা, এই সব কিছু মানসিক বিকারগ্রস্থতা, ডিস্টারবেন্স থেকে কিছুটা হলেও মানুষকে বাঁচায়।

ট্রমাটিক এটাক থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই ট্রিটমেন্ট নিতে হবে, প্রফেশানাল এক্সপার্টিজের কাছে যেতে হবে। কিন্তু ওভারঅল মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য যেটা প্রয়োজন তা হলো, নেচার ও গাছপালা, বাগান, কৃষি কাজের সংস্পর্শে থাকা। শারীরিক ব্যায়াম, কসরত, ইয়োগাতে কিছু সময় কাটানো, ঘরের মেনুয়েল কাজকর্ম করার চেষ্টা করা ইত্যাদি।

ট্রমার শিকার হলে নিজের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। কী ভাবে ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসবেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তার জন্য সবথেকে আগে প্রয়োজন নিজেকে যতটা রিল্যাক্স রাখা। এর জন্য কী করবেন তা জেনে নিন।

  • সংকটের সময়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। সব দায়িত্ব একা পালন করতে যাবেন না। যতটা দায়িত্ব আপনার পক্ষে পালন করা সম্ভব, ততটাই দায়িত্ব হাতে নিন। এতে আপনার ওপর মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে।
  • ট্রমা থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে পারিবারিক সম্পর্কে। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটান। দেখবেন নিজেকে অনেকটা চাপমুক্ত লাগছে। কোনও পুরনো শোক বা মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতেও পরিবারের লোকেদের সঙ্গ কাজ করে।
  • ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। এক থেকে চার পর্যন্ত গুনুন। তারপর চার পর্যন্ত গুনে ধীরে ধীরে শ্বাস ছেড়ে দিন। কয়েকবার এরকম করুন।
  • অ্যালবাম বের করুন আর সেখান থেকে সুখের স্মৃতি সঙ্গে জড়িত কোনও ছবি দেখুন, যা আপনার দেখতে ভাল লাগে। এমনই ছবি দেখুন যা দেখলে আপনি খুশি হবেন।
  • প্রচণ্ড স্ট্রেস লাগলে চোখ বন্ধ করে রাখুন কিছুক্ষণ। এতে একাগ্রতা বাড়বে। নেগেটিভ এনার্জি থেকে মুক্তি পাবেন। একটা খাতা-পেন নিয়ে আপনার স্ট্রেসের সম্ভাব্য কারণগুলো লিখে ফেলুন। এর ফলে স্ট্রেসের প্রকৃত কারণ আপনি নিজেই খুঁজে বের করতে পারবেন।
  • ট্রমার মধ্যে থাকলে অবশ্যই চিকিত্‍সকের সাহায্য নেবেন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন।
  • যোগ ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে এন্ডোর্ফিনের নিঃসরণ বাড়ে, যা মনকে প্রফুল্ল করে তোলে। তাছাড়া যোগ ব্যায়াম মেদবহুলতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমিয়ে দেয়। তাই বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে আপনার শরীরের উপযোগী যোগ ব্যায়ামের ধরণ বেঁছে নিন।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আজকের রাশিফল

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন