নাসিম রুমি: অবসর সময়ে অনেকেই কান খোঁচান। কাঠি, কটন বাড কিংবা পাখির পালক দিয়ে কান খুঁচিয়ে সময় কাটান। মিনিটখানেক কানের ভেতর সুড়সুড়ি দিলেই যেন আরামে চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কিন্তু জানেন কি, ক্ষণিকের এই আরামই বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে!
কান এমন একটি জায়গা, যেখানে অসংখ্য স্নায়ু জটলা পাকিয়ে থাকে। তাই এর উপর সুড়সুড়ি দিলে আরাম লাগাই স্বাভাবিক। কিন্তু সামান্য অসাবধানে কটন বাড বা কাঠি যদি আরেকটু ভেতরে চলে যায় তাহলে পর্দায় খোঁচা লাগতে পারে। এতেই বড় বিপদ হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, কান খোঁচাতে গিয়ে পর্দায় চোট লেগেছে, এবং সেই চোট মস্তিষ্কে পর্যন্ত প্রভাব ফেলেছে— এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে। এই অভ্যাস ডেকে আনতে পারে বধিরতা। অনেকসময় আবার বাডের তুলা অসাবধানতায় কানে ঢুকে যেতে পারে। এতেও বড় বিপত্তি ঘটতে পারে। যা সমাধানে শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারের সাহায্য নিতে হয়।
শুধু তাই নয়, কটন বাড নিয়ে খোঁচানোর ফলে প্রতি দিনই কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষতি করছি আমরা। ক্ষতি হচ্ছে কানের তরুণাস্থিরও। যার ফলে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে শ্রবণশক্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কানের ভেতর যেটুকু ময়লা থাকে, তা আদতে কানের পর্দাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। বিকট আওয়াজ, কানে বায়ু ঢোকা— এসব থেকে কানের পর্দাকে রক্ষা করে এই ময়লাগুলো। কানের ভিতরের আঠালো পদার্থও আমাদের কানের জন্য ভালো। এটি কানের পর্দাকে বাইরের সংক্রমণ ও ধুলোবালি থেকেও রক্ষা করে।
ময়লা বেশি জমে যাওয়ার ধারণা ভুল। যেটুকু ময়লা অতিরিক্ত, কান তা হাঁচি-কাশি-গোসল-ঘুম ইত্যাদি নানা জৈবিক কাজের হাত ধরেই বের করে দেয়। আলাদা করে খুঁচিয়ে বার না করলেও চলে। তবু অনেক ক্ষেত্রে এই খোল বেশি মাত্রায় জমে গিয়ে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই কটন বাড দিয়ে কান খোঁচানো যাবে না, এমনটাই পরামর্শ চিকিৎসকদের।