পেঁপে গাছ খুব সহজেই হয়, ফলনও হয় অনেক। পেঁপে এমন একটি গাছ যার প্রায় প্রতিটি অংশই ব্যবহার করা যায়। এর বীজেও রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড। তাই বিশ্বে এই ফল পছন্দের তালিকায় রয়েছে সবার উপরে। তবে আমরা অনেকেই পেঁপে পাতা সম্পর্কে জানি না। এরও উপকারিতা প্রচুর। আজ এই প্রতিবেদনে আমরা পেঁপে পাতার উপকারিতা ও গুণাগুণ সম্পর্কে জানবো।
পেঁপে পাতা স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমন স্কিনের জন্য উপকারী। পেঁপে পাতায় রয়েছে পাপাইন, যা হজমে সাহায্য করে। পেট ফুলে যাওয়া এবং অন্যান্য হজম সংক্রান্ত ব্যাধি প্রতিরোধ করে। হজমের পাশাপাশি কারপেইনের মতো শক্তিশালী যৌগ খুশকি ও চুল পড়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া ভিটামিন পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন ই, সি এবং বিটা ক্যারোটিন। আর পেঁপে পাতায় এ, সি, ই, কে ও বি এবং ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রন প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাহলে জেনে নিন পেঁপে পাতার জুসের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা-
১) ডেঙ্গু মোকাবিলা করে পেঁপে পাতা
ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীদের পেঁপে পাতার রস খেতে বলা হয়। ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেট কাউন্ট কমতে শুরু করে, পেঁপে পাতার রস প্লেটলেট বাড়াতে সাহায্য করে।
২) অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া উপাদান
পেঁপে পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ম্যালেরিয়া উপাদান। এতে থাকা এসিটোজেনিন যৌগ ডেঙ্গুর পাশাপাশি ম্যালেরিয়া সারিয়ে তুলতেও সাহায্য করে।
৩) লিভারের জন্য ভালো
লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে পেঁপে পাতার রস। তাই এই রস প্রতিদিন খেলে লিভারের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। জন্ডিস এবং লিভার সিরোসিস হওয়ার ভয় থাকে না।
৪) হজমে সাহায্য
পেঁপে পাতায় থাকা এনজাইম প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেড এবং মিনারেলকে ভেঙে হজমে সাহায্য করে। এর উচ্চ অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান পেট এবং মলাশয়ের প্রদাহকে হ্রাস করে। পেঁপে পাতার রস খেলে আলসার নিরাময় হয়।
৫) রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করে
ডায়াবেটিসে দারুন কাজ করে পেঁপে পাতার রস। এটি ইনসুলিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। এর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান কিডনি ড্যামেজ এবং ফ্যাটি লিভারের মতো ডায়াবেটিসের ফলে যে জটিলতা দেখা দেয় তা কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। কিডনির সমস্যা নিমেষেই দূর করবে মেথির তেল! এবার জেনে নিন এর অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা-
৬) মাসিকের ব্যথা কম করে
পিরিয়ডের সময় পেটের যন্ত্রণা প্রায় সবার হয়। পেঁপে পাতার রস খেলে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই রস হরমোন এবং মাসিক চক্র ঠিক রাখে।
৭) ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে
পেঁপে পাতায় থাকা এসিটোজেনিন যৌগ অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান। এথনোফার্মাকোলজির জার্নালের সমীক্ষা অনুসারে, পেঁপে পাতায় থাকা এনজাইমগুলো লিভার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। পেঁপে পাতার অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান প্রদাহ এবং কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সহায়ক হতে পারে।
৮) স্কিনের সমস্যা দূর করে
পেঁপে পাতার রসে ভিটামিন সি এবং এ থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং আপনাকে স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল ত্বক দেয়। পেঁপে পাতার রস ফ্রি র্যাডিক্যালসের ক্রিয়াকে দমন করে। কারপাইন যৌগের উপস্থিতি অতিরিক্ত অণুজীবের বৃদ্ধি পরীক্ষা করে এবং ত্বক পরিষ্কার করে। ত্বকের সমস্যাগুলি যেমন পিম্পলস, ফ্রিকেলস এবং ব্রণ থেকে সুরক্ষা দেয়।
৯) চুল ভালো রাখে
ত্বকের পাশাপাশি চুল ভালো রাখতেও পেঁপে পাতার রস কাজ করে। চুল পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া আটকায় পেঁপে পাতার রস। খুশকি দূর করতেও দারুন কাজ করে। এছাড়াও, স্ক্যাল্প থেকে ধুলো-ময়লা ও তেল দূর করে।