নাক ও কান ফোঁড়ানোর পর কারো কারো কিছু সমস্যা হতে দেখা যায়। কিছু সতর্কতা মানলে এই সমস্যা পোহাতে হয় না।
ছোট থেকে বড় সব বয়সী মেয়েরা গয়না পরতে পছন্দ করে। মেয়েদের গয়না পরার শখ পূরণের প্রথম ধাপ নাক বা কান ফোঁড়ানো।আগে সুই-সুতার সাহায্যে নাক-কান ফোঁড়ানো হতো। সুইয়ের সাহায্যে নাক বা কান ফুটো করে সুতার গিঁট বেঁধে দিত।
কেউ কেউ ডাক্তারের কাছে গিয়েও নাক-কান ফোঁড়াতেন। এখন এই কাজটির বেশির ভাগই করা হয় বিউটি পার্লারগুলোতে। সুই ও সুতার জায়গায় যোগ হয়েছে নাক-কান ফোঁড়ানোর আধুনিক যন্ত্র। এতে নাক-কান ফোঁড়ানোর হ্যাপাও অনেক কমে গেছে। তার পরও একটু অসতর্কতায় বিপত্তি ঘটতে পারে। বিশেষ করে নাক-কান ফোঁড়ানোর আগে-পরের ধাপগুলোতে ভুল করা যাবে না।
নাক-কান ফোঁড়ানোর আগে
নাক বা কান ফোঁড়াতে যে পিয়েরসিং গান ব্যবহার করা হয় সেটি উন্নতমানের বা ভালো ব্র্যান্ডের কি না নিশ্চিত হওয়া খুব জরুরি। পিয়েরসিং পিনটিও খুব ভালো মানের হতে হবে। নইলে এটি থেকেই সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ইদানীং গোল্ড প্লেটেড পিয়েরসিং পিন পাওয়া যায়। এই পিন ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ। এতে সোনার আবরণ দেওয়া থাকে বলে নাক বা কান ফোঁড়ানোর পরবর্তী অনেক সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। পিয়েরসিং করার সময় যিনি করাবেন তাঁকে হাতে অবশ্যই গ্লাভস পরতে হবে। পিয়েরসিংয়ের আগে অবশ্যই নাক বা কানের যে জায়গাটিতে ছিদ্র করাতে চান সেটি একটি মার্কার দিয়ে আগেই চিহ্নিত করে নিতে হবে। ফোঁড়ানোর আগে জায়গাটিতে অবশ্যই অ্যানেসথেসিয়া ক্রিম বা জেল ব্যবহার করতে হবে।
নাক-কান ফোঁড়ানোর পরে
নাক-কান ফোঁড়ানোর তিন দিন পর পিয়েরসিং পিন খুলে ফেলতে হবে। এই কয়েক দিন স্থানটিতে যেন ধুলা-ময়লার সংস্পর্শ না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। অপরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধোয়া যাবে না। ময়লা গামছা বা টাওয়েল দিয়ে মুখ মোছা যাবে না। প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুখ মুছে ক্ষতস্থানটিতে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগাতে হবে। দিনে দুবার অ্যান্টিবায়োটিক মলম ব্যবহার করলে জীবাণু সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যাবে। পিয়েরসিং পিন খোলার পর সোনার গয়না পরতে হবে।
অনেকের নাক বা কান ফোঁড়ানোর পর গয়না পরলে স্থানটিতে অ্যালার্জি বা চুলকানির সমস্যা হতে পারে। এ জন্য প্রথম সাত দিন অ্যালার্জির সংক্রমণ হতে পারে এমন কোনো খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ভিটামিন ‘সি’যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। গয়না পরলে যদি চুলকানি বা অ্যালার্জি হয়, তবে গয়নাটি বদলাতে হবে। অথবা ছোট্ট কাঠি পরিয়ে রাখা যেতে পারে। নইলে ছিদ্রটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুনরায় নাক-কান ফোঁড়াতে হবে। নাক বা কান ফোঁড়ানোর স্থানটি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে তখন সোনার গয়না পরতে হবে। ছিদ্রের স্থানটি পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার পরও গয়না পরলে যদি অ্যালার্জি বা চুলকানি হয়, তবে চিকিত্সকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতে হবে।
নাক-কান ফোঁড়ানোর পর যেসব সমস্যা হতে পারে
১। নাক বা কান ফুলে যাওয়া
২। স্থানটিতে ঘা তৈরি হওয়া
৩। পুঁজ বের হওয়া বা ঝরা
৪। ফুটোর স্থানটি শক্ত হয়ে যাওয়া
৫। চুলকানি হওয়া