বাজারে বিভিন্ন ধরনের চিজ পাওয়া যায়। সাধারণভাবে দুধ থেকে ছানার পানি, সিরকা, বাচ্চা গরুর অন্ত্রের ভেতরের ঝিল্লি থেকে প্রস্তুত কাফ রেনেট ইত্যাদি অম্ল উপাদানের সাহায্যে দুধের জলীয় অংশ সরিয়ে ফেলে তা বিশেষভাবে ফারমেন্ট করে বা গাজিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের চিজ।
অনেক ক্ষেত্রেই এই দুধের সলিড অংশকে মথে, ফেটিয়ে, ঘুরিয়ে বিভিন্ন কৌশলে একেক রকম চিজের কাঙ্ক্ষিত টেক্সচার আনা হয়।
বিভিন্ন ধরনের চিজের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে। আবার অতিরিক্ত গ্রহণে তৈরি হতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
মোজেরলা চিজ
প্রতি আউন্স বা (২৮ গ্রাম) মোজেরলা চিজে ৭২ কিলোক্যালরি, সাত গ্রাম প্রোটিন, ৪.৫ গ্রাম চর্বি, ৩ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৭৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ২২২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৩১ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ০.৮ মিলিগ্রাম জিংক পাওয়া যায়। এই চিজ প্রোটিনেরও ভালো উৎস। অন্যান্য চিজের তুলনায় এই চিজে সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও জিংকের উৎস হওয়ায় এটি দাঁত ও হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিকের উৎস হওয়ার জন্য এটি অন্ত্রের কার্যপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত অতিরিক্ত গ্রহণে শরীরের যেকোনো ধরনের প্রদাহ তৈরি হতে পারে, রক্তের চর্বির মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, ওজন বেড়ে যেতে পারে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, কার্ডিওভাসকুলার রোগের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
চ্যাডার চিজ
প্রতি আউন্স বা (২৮ গ্রাম) চ্যাডার চিজে ১২০ কিলোক্যালরি, ৭ গ্রাম প্রোটিন, ৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১০ গ্রাম চর্বি, ১ গ্রাম চিনি, ১৯০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ২০১.৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৯৫.৭ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’, ০.৩ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন-বি১২ পাওয়া যায়। হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করে, ভিটামিন বি১২-এর উৎস হওয়ার জন্য এটি রক্ত গঠনে সাহায্য করে। অন্যান্য চিজের তুলনায় চ্যাডার চিজে ল্যাকটোজের পরিমাণ অনেক কম থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এটি রক্তের কোলেস্টেরলের লেভেল বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত গ্রহণে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে। দুধে বা দুধের তৈরি জিনিসে অনেকেরই অ্যালার্জি থাকে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতি আউন্স বা (২৮ গ্রাম) ক্রিম চিজে ৯৯ কিলোক্যালরি, ২ গ্রাম প্রোটিন, ১০ গ্রাম চর্বি, ৫.৭৩ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ১.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম চিনি, ৯৩ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৮৯.৪ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ ও ০.২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘ই’ পাওয়া যায়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস এটি। শরীর থেকে ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। অন্ত্রের কার্যপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন ক্রিম চিজ যারা গ্রহণ করে, তাদের ক্ষেত্রে কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অর্থাৎ তাদের ক্ষেত্রে রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।