নিমগাছের প্রায় প্রতিটি অংশই কাজে লাগে। আর নিমপাতার ওষুধি গুণ বলে শেষ করা যায় না! নিম পাতার স্বাদ তেতো হলেও গুণে কিন্তু মিষ্টি। ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত জীবাণুর কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যায় দারুণ কার্যকর এই পাতা।
একজিমা, ফোড়ার মতো গোটা (বয়েল), ত্বকের আলসার, রিং ওয়ার্ম নামক ছত্রাকের সংক্রমণসহ নানান সমস্যায় নিমপাতা কার্যকর। অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রণ, ফুসকুড়ি বা চুলকানির মতো সমস্যায় ব্যবহৃত হয়।
নিয়মিত নিমপাতা খেলে বহু জটিল কঠিন রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সব থেকে ভালো কাজ দেয়, সকালে খালি পেটে খেতে পারলে। এ ছাড়া গরম আঁচে তেল ছাড়া সিদ্ধ করে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। মুখের দুর্গন্ধ ও দাঁতের জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধে নিম পাতা কার্যকর। এ জন্য আগে নিমের দাঁতন ব্যবহার করা হত।
নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। যা ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। নিমপাতা ব্যাকটিরিয়া ও ফাঙ্গাস বিরোধী। নিয়মিত ত্বকে নিমপাতা বাটা লাগালে ত্বকে কোনো রকম ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হয় না। ব্রণের সমস্যাও দূর করে নিমপাতা। পাশাপাশি, ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে নিয়মিত নিমপাতার সঙ্গে কাঁচা হলুদ বাটা শরীরে লাগাতে পারেন।
চুল পড়া, খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শ্যাম্পুর পর নিমপাতা দেওয়া পানি দিয়ে মাথা ধুতে পারেন। স্ক্যাল্পের চুলকানির সমস্যায় নিমপাতার রস খুবই উপকারী। তাছাড়া নিমপাতার রসে চুলের গোড়া শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা বা রুক্ষ ভাব কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতে শুরু করে।
হঠাৎ কাটা-ছেঁড়া বা পুড়ে গেলে ক্ষত স্থানে নিমপাতার রস ভেষজ ওষুধের মতো কাজ করে। এমনকি ত্বক পুড়ে যাওয়ার পরে যদি পোড়া অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হয়, নিমপাতা উপকারী ভূমিকা রাখবে।
নিয়মিত নিমপাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যসহ লিভারের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি রাখে। গ্যাস বা বদহজমের দীর্ঘদিনের সমস্যায়ও নিমপাতা ভালো কাজ দেয়। পাশাপাশি রক্ত পরিশুদ্ধ করতে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে শরীর সুস্থ-সতেজ ও রোগমুক্ত রাখে। শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও বাড়ায় নিমপাতা।