পুষ্টিকর ফল হিসেবে পেঁপে কাঁচা-পাকা দুভাবেই খাওয়া যায়। অনেক পদের রান্নাতেও ব্যবহৃত হয় পেঁপে। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর এই ফল দেহের জন্য খুবই উপকারী।
পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, ই, পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামসহ বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে প্রায় ৮৯ গ্রাম পানি থাকে, যা দেহের পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক। পেঁপে থেকে সবচেয়ে বেশি উপকার মেলে সকালে খালি পেটে খেলে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং ক্যানসার, হৃদ্রোগসহ নানা জটিল রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে পেঁপে।
জেনে নেওয়া যাক, প্রতিদিন খালি পেটে পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
প্রতিদিন সকালে পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ, পেঁপেতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। পাশাপাশি এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। ফলে বারবার ক্ষুধা লাগে না।
পেঁপেতে থাকা ফাইবার বা আঁশ রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। পেঁপে মিষ্টি হলেও এর সুক্রোজের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স নিম্ন মাত্রার। ডায়াবেটিক রোগীদের বিভিন্ন মিষ্টি ফল খাওয়ায় বাধা থাকলেও পেঁপে খেতে বলা হয়। নির্দিষ্ট পরিমাণে পেঁপে খাওয়ার পরও রক্তে শর্করার মাত্রা অতিমাত্রায় বাড়ে না।
হজমে সহায়তা করে
পেঁপেতে আছে প্যাপেইন নামের একটি এনজাইম, যা প্রোটিন পরিপাকে সহায়তা করে। পেঁপের ত্বক এবং বীজে থাকা প্রিবায়োটিক ফাইবার অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীবের পুষ্টি উপাদান হিসেবে কাজ করে। পেঁপেতে থাকা ফাইবার ও পানি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এসব ফাইবার একধরনের ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎপাদন বাড়ায়, যা শুধু পরিপাকতন্ত্র নয়, পুরো দেহের জন্যই উপকারী।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়
পেঁপেতে থাকা ফাইবার রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। এ ছাড়া পেঁপে পটাশিয়ামের একটি চমৎকার উৎস। পটাশিয়াম–সমৃদ্ধ খাবার উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ক্যানসার প্রতিরোধ করে
নিয়মিত পেঁপে খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। পেঁপে ফ্রি র্যাডিক্যাল কমিয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া পেঁপেতে থাকা বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপেন নামক উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তারুণ্য ধরে রাখে
শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত রাখতেও সহায়তা করে পেঁপে। এতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ত্বককে নানা ধরনের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় এবং বলিরেখা কমিয়ে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়
পেঁপেতে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন রোগব্যাধির বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে তোলে।