নাসিম রুমি: শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে রোজ একটি করে ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। কারণ, ডিমের মধ্যে থাকে কমপ্লিট প্রোটিন। তা ছাড়াও ডিমে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন এবং খনিজ। তাই সুষম খাবার হিসাবে ডিম বেশ জনপ্রিয়।
সকালের নাস্তাতে পাউরুটির সঙ্গে ডিম সিদ্ধ থাকা বাঞ্ছনীয়। তবে সেদ্ধর তো বিভিন্ন ধাপ হয়। কেউ ডিম পুরো সেদ্ধ করে খান। আবার কেউ অর্ধেক।
কিন্তু ঠিক কী ভাবে ডিম রান্না করে খাওয়া শরীরের জন্য সবচেয়ে ভাল? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডিম সেদ্ধ করে খাওয়াই সবচেয়ে উপাদেয়। বিভিন্ন গবেষণায় সেই প্রমাণ মিলেছে।
তেলবিহীন ডিম পোচ
অনেকেই পানিতে বা তেলে ডিম পোচ খেয়ে থাকেন। তবে তেল পোচের তুলনায় পানিতে ডিম পোচ বেশি উপকারি। কারণ পানিতে ডিম পোচে তেল লাগে না এবং ডিমের সবটুকু পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।
একটা বাটিতে ডিম সাবধানে ভেঙে নিতে হবে যাতে কুসুম আস্ত থাকে, ছড়িয়ে না পড়ে। এর ওপর স্বাদ অনুযায়ী গোলমরিচ ও লবণ ছিটিয়ে দিতে হবে। এবার একটি পাত্রে অল্প পানি ফুটিয়ে তার মধ্যে সাবধানে এই ভাঙা ডিম ছেড়ে দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
শরীরচর্চার সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁদের জন্য এই খাবার অনেক ভাল এবং সহজপাচ্যও বটে। তাই সব সময়ে সেদ্ধ ডিম খেতে ইচ্ছে না করলে স্বাদ বদল করতে এক-আধটা দিন পোচ রাখা যেতেই পারে।
হাফ বয়েল
ডিমের বাইরের সাদা অংশ ভালো মতো লবণ পানিতে ৫ মিনিটি সিদ্ধ করতে হবে। আর কুসুম আধা সিদ্ধ থাকবে। এই পদ্ধতিতেও ডিমের পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। তবে আধা সেদ্ধ ডিমে ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এর ফলে বমি, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই আধা সেদ্ধ ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ ডিম পুরো সেদ্ধ হলে এতে থাকা রোগ-জীবাণু ও মরে যায়।
ফুল বয়েল
ফুল বয়েলড ডিম শুধু খাওয়াসহ সালাদ বা স্যান্ডউইচের সঙ্গে খাওয়া যায়। লবণ পানিতে ১০ মিনিটি সিদ্ধ করলেই হবে। ফুল বয়েল ডিম সহজে হজম হয়।
ডিম বেক
ইদানীং আবার ডিম বেক করেও খেতে দেখা যায় অনেককে। কিন্তু শরীরের জন্য সেই পদ্ধতি খুব একটা কার্যকর নয় বলেই মনে করেন গবেষকরা। এই পদ্ধতিতে ডিম রান্না করলে তেল বা মাখন অল্প পরিমাণে লাগলেও ভিটামিন ডি-র মাত্রা নষ্ট হয়। তাই সাধারণভাবে ফুল সেদ্ধ করে কিংবা হাল্কা তেলে অল্প ভেজে ডিম খেলে শরীরের অনেক বেশি উপকার হয় বলেই দেখা গিয়েছে গবেষণায়।
কাঁচা ডিম খাবেন না
কেউ কেউ বেশি পুষ্টির আশায় কাঁচা ডিম খান। এতে বেশি শক্তি পাওয়া যায় বলে তাদের ধারণা। এটিও একদমই ঠিক নয়। বরং পুরোপুরি ভুল। কারণ এভিডিন নামক এক ধরনের প্রোটিন থাকে কাঁচা ডিমে। আমাদের শরীরে বায়োটিনকে কাজ করতে বাঁধা দেয় এই প্রোটিন। যে কারণে ত্বক ও চুলের ক্ষতি হতে পারে কাঁচা ডিম খেলে। তাই কাঁচা ডিম খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিন।