অধ্যাপক ডা. আলতাফ সরকার: ভুলোমনের সমস্যা সাধারণত বার্ধক্যের। বয়স বাড়লে স্মৃতি মাঝেমধ্যেই বিশ্বাসঘাতকতা করে। কিন্তু এ স্মৃতিভ্রমের সমস্যা কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তার অন্যতম উদাহরণ হলো ডিমেনশিয়া। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিশ্বে পাঁচ কোটির বেশি মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত।
আলঝেইমার্সের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিও এক ধরনের ডিমেনশিয়া। বয়স বাড়লে তো বটেই, অনেক সময় প্রতিদিনের কিছু অভ্যাস কম বয়সেই ডেকে আনতে পারে ডিমেনশিয়ার মতো অসুখ। এ ছাড়া বংশগতভাবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবনযাত্রা পরিবর্তনের মাধ্যমে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে ঘরোয়া কিছু কাজ নিয়মিত করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
বাগানের কাজ করলে মানসিক চাপ কমে। এর ফলে মন ও শরীর সতেজ হয়। তার ফল পায় মস্তিষ্ক। চারপাশের চাপের প্রভাব কম পড়ে মস্তিষ্কের ওপর।
রান্নার মতো সৃজনশীল কাজ কমই আছে। রান্নাকে যতই কম গুরুত্ব দেওয়া হোক না কেন, কিন্তু এর মধ্যে অনেক ভাবনাচিন্তার অবকাশ আছে। কোন সবজি কীভাবে কাটা হবে থেকে শুরু করে মসলা বাছাই– সবটিতেই মস্তিষ্কের অনেক কাজ থাকে। তাতে মস্তিষ্কের লাভই হয়।
প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়ামের মধ্যে সবার সেরা হাঁটা। এটি হাড়, হাড়ের সংযোগ ও মাংসপেশিকেও সবল করে। সাহায্য করে ভালো ঘুম ও ওজন নিয়ন্ত্রণেও। সে জন্য প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার পা হাঁটার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। একা হাঁটার চেয়ে চেষ্টা করুন সঙ্গী জোগাড় করে হাঁটার। নিয়ম করে হাঁটতে হবে। হাঁটলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে, মন ভালো থাকে। দুশ্চিন্তা দূর হয়।
আপনি ব্যায়াম যত কঠোরভাবেই করুন না কেন, সে অবস্থায় যদি ঠিকমতো শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে না পারেন, তাহলে বুঝবেন আপনার ব্যায়াম ঠিকঠাক হচ্ছে না। সে জন্য নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। বড় করে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। চেষ্টা করুন প্রক্রিয়াটা নাক দিয়ে করতে।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ।