দৈনন্দিন জীবনযাপনের পদ্ধতি ও মানসিক উদ্বেগের কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়াবেটিসের রোগী। আমাদের দেশে মূলত টাইপ-২ ডায়াবেটিসের তীব্রতা বেশি। সাধারণত ডায়াবিটিসের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয় চোখে!
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিস সাইলেন্ট কিলারের মতো। প্রথম থেকে ওষুধ না খেলে ও সচেতনতা অবলম্বন না করলে শরীরের অঙ্গ একে একে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। ছোট ছোট রক্তবাহী নালিগুলোরও ক্ষতি করে। ডায়াবেটিস আলাদা করে বোঝা যায় না। তাই ডায়াবেটিস থাকলে বছরে অন্তত এক বার রেটিনা ও চোখের প্রেসার পরীক্ষা করানো জরুরি।
বেশি বয়সে অনেকেই চোখে ঝপসা দেখেন। সে ক্ষেত্রে মনে হতেই পারে, হয়েতো চোখে ছানি পড়েছে। কিন্তু ডায়াবেটিস থাকলেও রেটিনা গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যা ডেকে আনে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো অসুখ। তাই ডায়াবেটিসের চিকিৎসার সঙ্গে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাও জরুরি।
এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায়ে চোখের রেটিনায় রক্তবাহী সরু ধমনীগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সেই অংশে এক প্রকার ফ্লুইডের ক্ষরণ শুরু হয়। দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এর পরবর্তী পর্যায়ে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস্যা আরও বাড়ে। রেটিনার বিভিন্ন অংশে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। চোখে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, ডাক্তারি পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় ভিট্রিয়াস হেমারেজ। এর থেকে অন্ধত্ব আসতে পারে।
যেসব লক্ষণ দেখে সতর্ক হবেন
১. ধীরে ধীরে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।
২. এই সমস্যায় আক্রান্তদের কিছু পড়তে বা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। তাই হঠাৎ এমনটা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন।
৩. ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সমস্যা বাড়তে শুরু করলে অনেকের রং দেখতেও সমস্যা হয়।
৪. চোখে স্বাভাবিক দেখতে দেখতে হঠাৎ চার দিকটা অন্ধকার দেখায়। আবার কেউ কেউ নির্দিষ্ট কোনো অংশ দেখতে পান না।
৫. চোখের সামনে পোকার মতো কিছু ঘুরে বেড়াচ্ছে মনে হওয়া বা আচমকা আলোর ঝলকানিও এই রোগের লক্ষণ।
এই রোগের প্রকোপ কমাতে গেলে ডায়াবেটিসকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এর জন্য সবার আগে ধূমপান বন্ধ করুন। শারীরিক কসরত শুরু করুন। একান্তই শরীরচর্চায় অনীহা থাকলে হাঁটাহাঁটি কিন্তু করতেই হবে। আর হ্যাঁ, ডায়েটের বিষয়ে সচেতন হন। প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেন।