চলিত বাংলায় যাকে আমরা জ্বর ঠোসা বলি তা আসলে ভাইরাসজনিত খুবই ছোঁয়াচে সংক্রমণ, যা হার্পিস সিমপ্লেক্স নামের ভাইরাসের জন্য হয়ে থাকে। জ্বর ঠোসা বা হার্পিস লেবিয়ালিস সাধারণত সেকেন্ডারি (দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়া) সংক্রমণই হয়। জ্বর ঠোসা সাধারণত ঠোঁটের কোণে এবং এর আশপাশে মুখের ভেতর হয়।
কারণ
হার্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সরাসরি স্পর্শ বা লালার মাধ্যমে একই জিনিস যেমন—গ্লাস, চামচ, লিপস্টিক, শেভিং ইনস্ট্রুমেন্ট, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে ছড়ায়।
উপসর্গ
♦ ঠোঁটের কোণে চুলকানি
♦ ঝিনঝিন ভাব
♦ অবশ অবশ ভাব
♦ জ্বালাপোড়া
♦ ব্যথা
♦ জ্বর
♦ বমি ভাব ও মাথা ব্যথা
♦ অস্বাভাবিক অনুভব হওয়া ( প্রথম দিন)
♦ ঠোঁটের কোণে এবং এর আশপাশে গুচ্ছবদ্ধ ফুসকুড়ি, যা দুই-তিন দিনের মধ্যে ফেটে গিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে।
করণীয়
জ্বর ঠোসা সাধারণত সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে প্রথম দুই দিনের মধ্যে ওষুধ ব্যবহার শুরু করলে দ্রুত ভালো হয়। তাই অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মুখে ক্ষত থাকলে অ্যান্টিবায়োটিক মাউথওয়াশ (.২% ক্লোরহেক্সিডিন) ব্যবহার করলে ভালো হয়।
যদি দেখা যায় ১০ দিনের মধ্যেও ক্ষত সেরে উঠছে না, তবে বুঝতে হবে ক্ষতে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হয়েছে অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে। একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করে এ রকম গ্লাস, চামচ, পিরিচ, তোয়ালে, লিপস্টিক, মেকআপ, শেভিংসংশ্লিষ্ট জিনিসপত্র ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়া ছোট বাচ্চাদের চুমু দিতে দেওয়া যাবে না। মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতে হবে। রোদে বের হলে ঠোঁটে সানস্ক্রিন বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত স্থান স্পর্শ করে চোখ বা প্রস্রাবের রাস্তায় হাত দেওয়া বা অন্য ব্যক্তিকে স্পর্শ করা যাবে না।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাহফুজুর রহমান
ডেন্টাল সার্জন
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ