করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে স্কুল- কলেজ বন্ধ হওয়ায় ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে শিশুরা। আর ঘরবন্দী থাকার কারণে শিশুরা সময় কাটানোর উপায় হিসেবে ইন্টারনেটের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে একটা দীর্ঘ সময় ইন্টারনেটে কাটাচ্ছে শিশুরাও। এই নিয়ে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ করতে বাবা-মা কে মূলত দুটি বিষয়ের উপর নজরে রাখতে হবে। শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে কোন ধরণের বিপদে পড়ছে কি না আর দ্বিতীয়ত তারা কোনও আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে কিনা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন একটু সচেতন হলেই শিশুদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
১. প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার: শিশুদের যদি কোন ডিভাইস দেওয়া হয় তাহলে সেটিতে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করাটাই নিরাপদ বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। শিশুদের যে ডিভাইসটি দেওয়া হয় সেটি চালু করতে হলে একটি ই-মেইল অ্যাড্রেস দরকার হয়। শিশুদের ই-মেইল অ্যাকাউন্টটি খোলার সময় তার জন্ম তারিখটি সংযুক্ত করার পর সেটি যদি ১৩ বছরের নিচে হয় তাহলে এমনিতেই ওই অ্যাকাউন্টটি প্যারেন্টাল কন্ট্রোলের অধীনে হবে। সেক্ষেত্রে জানতে চাওয়া হবে যে, ওই অ্যাকাউন্টটি অন্য কার অ্যাকাউন্টটির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে। অর্থাৎ সেখানে যেকোন একজন অভিভাবকের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট দিতে হবে।
২. কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ ইন্সটল করুন: প্যারেন্টাল সেফ ব্রাউজার নামে একটি অ্যাপ আছে। এটা শিশুর ডিভাইসে ইন্সটল করা হলে এটি ব্যবহার করে কোন ধরণের অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট দেখতে পারবে না শিশু। ইউটিউব কিডস নামে একটি অ্যাপ আছে যেটি শিশুদের কথা মাথায় রেখেই কন্টেন্ট তৈরি করে।
৩. চাইল্ড ভার্সন অপশনটি ব্যবহার করুন: ফেসবুক এবং মেসেঞ্জার এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের চাইল্ড ভার্সন আছে। সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেয়া যায় যেটি তারা ব্যবহার করলেও অভিভাবকদের সুপারভাইজ করার সুযোগ থাকে। যেমন ফেসবুকে কেউ রিকোয়েস্ট পাঠালে আগে বাবা বা মায়ের কাছে যাবে। আপনি অনুমতি দিলে তখন গ্রহণযোগ্য হবে।
৪. ইন্টারনেট সংযোগ নেয়ার সময় সচেতন হোন: যে কোম্পানির কাছ থেকে ইন্টারনেট সংযোগটি নেওয়া হচ্ছে তাদের বাচ্চাদের জন্য সেফ ইন্টারনেট-এর ফিচারটি আছে কিনা সেটি যাচাই করে নেওয়া ভালো।এই ফিচারটি থাকলে সার্ভিস প্রোভাইডারদের কাছ থেকেই কিছু সাইট বা কন্টেন্ট ব্লক করে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
৫. ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়:বিশ্বের অনেক দেশেই একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ইন্টারনেট চালাতে দেওয়া হয় না।শিশুরা কতক্ষণ অনলাইন বা ইন্টারনেটে থাকবে তার একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
৬. শিশুর সঙ্গে আপনিও অংশ নিন: ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় সময় থাকলে আপনিও শিশুর সাথে বসুন। শিক্ষামূলক বিভিন্ন চ্যানেল এবং ওয়েবসাইট রয়েছে। তাদেরকে সেগুলো দেখতে উৎসাহিত করুন।