অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর, রসাল ও সুস্বাদু একটি ফল হচ্ছে পেঁপে। এটি কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া হয়ে থাকে। এ ফলটির স্বাদের পাশাপাশি এর অনেক গুণাগুণ থাকার কারণে এর কদর সারা বিশ্বেই। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই ফলটির বীজও আপনি খেতে পারবেন আর এর বীজেরও রয়েছে অনেক গুণাগুণ।
পেঁপের বীজ আমাদের শরীরে ফাইবার সরবরাহ করার মাধ্যমে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। আর এতে থাকা উচ্চ ফাইবার হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস এবং স্থূলতার ঝুঁকি কমাতেও অনেক উপকারী। টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেঁপের বীজের মনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে উচ্চমাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড এবং খুব কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন যথাক্রমে ১৯ শতাংশ ও ২২ শতাংশ পর্যন্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে।
আমাদের মাঝে অনেকেই জানেন না যে, পেঁপের বীজের এত উপকার রয়েছে। আর যদি কেউ জানত যে এর এত উপকার রয়েছে, তা হলে হয়তো পেঁপের বীজ কেউ ফেলে দিতেন না। আজ জানুন পেঁপের বীজের বিভিন্ন উপকারী দিক—
১. সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে
পেঁপের বীজ শরীরের নির্দিষ্ট ধরনের কিছু ছত্রাক এবং পরজীবী ধ্বংস করতে পারে। আর এর কারণে এটি আমাদের শরীরে বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, শুকনো পেঁপের বীজ ও মধু দিয়ে তৈরি পানীয় অন্ত্রের পরজীবী উল্লেখযোগ্যভাবে বিনাস করতে পারে।
২. কিডনি কার্যকারিতা রক্ষা করে
আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে কিডনি। এটি আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত তরল অপসারণ করতে অনেকটা ফিল্টারের মতো কাজ করে থাকে। পেঁপের বীজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কিডনির কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে।
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
পেঁপের বীজের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেঁপের বীজের নির্যাস শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ছাড়া আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপের কালো বীজ প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি হ্রাস করতে পারে।
৪. হজম শক্তিতে উপকারী
পেঁপের বীজ ফাইবারের অনেক ভালো উৎস। আর এ কারণে এটি আপনার হজম শক্তিতে উপকারী হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, পেপেঁর বীজে থাকা ডায়েটরি ফাইবার প্রদাহজনক পেটের রোগ থেকে রক্ষা করে এবং হেমোরয়েডের লক্ষণ উপশম করতে পারে। এ ছাড়া অন্ত্রের আলসার গঠনে বাধা দিতেও সহায়তা করে পেঁপের বীজ।
৫. হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে
পেঁপের বীজ হৃৎপিন্ডকে ভালো রেখে হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে ভিটামিন এ, সি, ই এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতেও সাহায্য করে।
তবে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে পেঁপের বীজ খাওয়ার আগে। কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটি শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। তবে ক্ষতির চেয়ে এর উপকারই বেশি। আর গর্ভকালীন পেঁপের বীজ খাওয়া যাবে না।
তথ্যসূত্র: হেলথলাইন ডটকম