সারা দিনে কী করবেন, কিভাবে চলবেন তার রুটিন করার উপযুক্ত সময় হলো সকাল। দিনের শুরুটা ভালো হলে আশা করা যায় সারা দিনও ভালো যাবে। অনেকের সকাল শুরু হয় চা-কফি দিয়ে কোনো ধরনের ওয়ার্কআউট ছাড়া। আপনি যদি ওজন কমাতে চান, তাহলে সে অভ্যাস আপনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
অনেক সময় আমরা এই ছোটখাটো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিই না। কিন্তু এতে করে নিজের অজান্তে বাড়তে থাকে ওজন।
ওজন কমানোর উপযুক্ত সময় সকাল কেন?
নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা মতে, সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করলে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি ফ্যাট বার্ন হয়। খালি পেটে ব্যায়াম করলে শরীরে শক্তি উৎপাদনের পাশাপাশি ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে। এভাবেই আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে শরীরের ওজন।
সকাল সকাল ওঠা
সকালে ওঠার অর্থ এই নয় যে আপনি কম ঘুমাবেন। কারণ ওজন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া জরুরি। এ জন্য রাতে দ্রুত ঘুমিয়ে সকালে তাড়াতাড়ি ওঠার চেষ্টা করুন। রাতে ভালো একটা ঘুমের পর ওয়ার্কআউটের মাধ্যমে দিন শুরু করুন। এরপর স্বাস্থ্যকর নাশতা করুন। দিনের শুরুটা এমন হলে সারা দিন আপনার ভালো যাবে।
রোদে বসা
ভিটামিন ‘ডি’ ছাড়া ওজন কমানোর জন্য রোদ পোহানোও জরুরি। সকালে কিছু সময়ের জন্য রোদে দাঁড়ান। এতে করে নিজেই সুস্থ বোধ করবেন, সেই সঙ্গে আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।
ওয়ার্কআউট রুটিন
মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্স ইন স্পোর্টস অ্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সকালে ব্যায়াম করলে একদিকে যেমন ওজম কমে, সেই সঙ্গে খাবারের প্রতি আগ্রহও অনেকটা কমে। শুধু ওজনই কমায় না, শরীর সুস্থ রাখতে এবং শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে ওয়ার্কআউট।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান
সকালে পানি পান বাদ দেবেন না। শরীরের বায়োলজিক্যাল ফাংশনের জন্য, মেটাবলিজম বাড়ানোর জন্য এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করার জন্য পানি খাওয়া অনেক জরুরি। পানি আপনার শরীরের অনেক ক্যালোরি বার্ন করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে পানি শরীর হাইড্রেট রাখে এবং ক্ষুধাও কমায়। আপনি চা বা লেবুপানির ক্ষেত্রে জোর দিতে পারেন। ওজন কমাতে চাইলে লেবুপানি হলো উপযুক্ত।
প্রোটিনসমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট
সকালে যত ব্যস্ত হোন না কেন, নাশতা খাওয়া বাদ দেবেন না। আর নাশতা যেন প্রোটিনসমৃদ্ধ হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ক্ষুধা কমায় এবং মেটাবলিজম বাড়ায়। সে ক্ষেত্রে আপনি নাশতায় ডিম, দুধ, চিজ, ডাল, আলমন্ডস, টোফু, দই রয়েছে।
মননশীলতা অনুশীলন
বেশি চিন্তায় থাকলে শরীর থেকে কার্টিসল হরমোন নিঃসৃত হয়। আর এ হরমোন নিঃসরণের ফলে ওজন বাড়ে। এ জন্য দুশ্চিন্তা করা বাদ দিন। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, মন ভালো থাকলে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকা যায় এবং ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমে।
ওজন মাপা
প্রতিদিন সকালে উঠে ওজন মাপুন। এতে করে আপনার প্রতিদিনের রুটিন কী পরিমাণ সাহায্য করছে সে বিষয়ে আপনি বুঝতে পারবেন। জার্নাল অব দি একাডেমি নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াটেটিকসে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুযায়ী, যারা প্রতিদিন ওজন মাপে তারা যারা মাঝেমধ্যে মাপে তাদের তুলনায় তিন গুণ বেশি ওজন কমাতে পারে।