ওজন ও রক্তচাপ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই দুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে জটিলতার শেষ নেই। আঁশযুক্ত খাবারে ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এ বিষয়ে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বারডেমের পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো।
দেহের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবারের ওপর নির্ভর করা যায়। অপরদিকে যাদের ওজন কম তাদের অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। রাসায়নিক আঁশের চেয়ে উদ্ভিজ্জ আঁশ খুব বেশি উপকারী যেমন-ভুসি ও ভুষিযুক্ত শস্য, ভুট্টা, শুকনো শিম, মটরশুঁটি, বরবটি, ডাল, ব্রাউন ব্রেড, লাল চাল, শুকনো ফল যেমন-বাদাম, খেজুর, খোরমা, যে কোনো ধরনের শাক, খোসাসহ আলু, তাজা ফল ইত্যাদি। আঁশজাতীয় খাবার সম্পর্কে টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়েরা ডা. রাথকে’র মতে গমের ভুসিই উত্তম।
যে কোনো আঁশ দেহে শোষিত হতে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এক গ্রাম আঁশ শোষিত হতে পনেরো গ্রাম পানি প্রয়োজন। এ জন্য গমের রুটি খেলে পানি বেশি পান করতে হয়।
বেশ কয়েকটি রোগের প্রতিষেধক হিসাবে উচ্চ আঁশ কাজ করে। যেন-কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, কোলন ও রেকটামের ক্যানসার, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস, পিত্তপাথুরি, ওজনাধিক্য, দন্তক্ষয় ইত্যাদি। উচ্চ আঁশ সুস্বাদু, সস্তা ও পুষ্টিকর। আমরা সাধারণত যে ভাত খাই তা খুবই সসৃণ। এ জন্য লাল চাল খুবই ভালো। এতে প্রচুর আঁশ থাকে এবং তা বেশ সুস্বাদু।
মূলজাতীয় সবজির মধ্যে গাজর, আলু, মিষ্টি আলু, মুলা, কচু এগুলোতে আঁশ আছে। ক্ষুধার্ত মানুষকে বেশ ভালোভাবে এগুলো পেট ভরাতে সাহায্য করে। শস্য ও ডাল হলো বীজজাতীয় খাবার। এগুলোতে প্রাকৃতিক আঁশ বেশি থাকে।
১৯৯১ সালে লন্ডনে ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ পাবলিকেশনের ডায়টারি রেফারেন্স ভ্যালুতে গাইড জেলি শ্যামসন খাদ্যের আঁশের একটি নতুন নাম দেন। সেটা হলো এনএসপি অর্থাৎ Non starch polysaccharides-এর সম্বন্ধে সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগের একটি নিবন্ধে চমৎকার একটি উপসংহার পাওয়া যায়। যেমন-
* প্রতিদিন নিয়মিত আঁশ গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
* এনএসপি রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
* আঁশের ভালো উৎস গমের ভুসিতে থাকে ক্যালসিয়াম, লৌহ ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কপার।
* যদি প্রতিদিন ১২ গ্রামের কম এনএসপি গ্রহণ করা হয়, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য, রেকটাম ক্যানসার ও গলস্টোন হতে পারে।
* প্রতিদিনের সম্পূর্ণ খাবারের মধ্যে ৩২ গ্রামের মতো Non starch polysaccharide থাকা উচিত।