দেহের বৃদ্ধি ও বেঁচে থাকার জন্য পুষ্টি প্রয়োজন। তবে কিছু অ্যান্টিনিউট্রিয়েন্টস সেই পুষ্টি শোষণকে বাধা দিতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন প্রাণী এবং উদ্ভিজ্জ খাবারে অ্যান্টি-নিউট্রিয়েন্টস প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া যায়।
গ্লুকোসিনোলেটস ও গয়ট্রোজেন
গ্লুকোসিনোলেটস ও গয়ট্রোজেন ক্রুসিফেরাস সবজি; যেমন—ব্রকোলি, বাঁধাকপির গ্লুকোসিনোলেটস ও গয়ট্রোজেন আয়োডিনের শোষণ রোধ করতে পারে, যা থাইরয়েডের কার্যকারিতায় বাধা দিতে পারে এবং গলগণ্ড সৃষ্টি করতে পারে।
লেকটিন
লেকটিন মটরশুঁটি, চীনাবাদাম, সয়াবিনে লেকটিন থাকে, যা ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও জিংক শোষণে বাধা দিতে পারে। কিছু লেকটিন বেশি পরিমাণে খাওয়ায় অন্ত্রের প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এটি জ্বালা সৃষ্টি করে, যার ফলে ডায়রিয়া এবং বমির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এটি পুষ্টিকে সঠিকভাবে শোষণ করা থেকে অন্ত্রকে বাধা দিতে পারে।
অক্সালেট
সবুজ শাকসবজি, চা, মটরশুঁটি, বাদাম, বিটের অক্সালেট ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যালসিয়াম শোষিত হতে বাধা দিতে পারে। হেলথ প্রফেশনালস ফলোআপ স্টাডি এবং নার্সেস হেলথ স্টাডি (এনএইচএস) ১ ও ২-তে দেখা যায় তিনটি বড় দল পুরুষ এবং মহিলাদের উচ্চ অক্সালেট গ্রহণের সঙ্গে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি গড়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব পুরুষ দৈনিক ৭৫৫ মিলিগ্রামের কম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করেছে এবং বেশি অক্সালেট গ্রহণ করেছে, তাদের পাথর হওয়ার ঝুঁকি ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফাইটেটস (ফাইটিক এসিড)
শস্য, বীজ, শিম, কিছু বাদামে থাকা ফাইটেটস আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের শোষণ হ্রাস করতে পারে। খাবার তৈরির সময় ফাইটেটসের পরিমাণ কমানো যেতে পারে। সঠিক উপায়ে রান্না করা, পানিতে সারা রাত ভিজিয়ে রাখা, অঙ্কুরোদগম, গাজন এবং আচার—সবই ফাইটিক এসিডকে ভেঙে দিতে পারে। কোলনের কিছু প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া ফাইটেটস ভেঙে ফেলতেও সাহায্য করতে পারে।
স্যাপোনিন
গোটা শস্যের স্যাপোনিন পুষ্টি উপাদানের শোষণে বাধা তৈরি করতে পারে। অধিক মাত্রার স্যাপোনিন গ্রহণ করলে পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া, বমি ও বমিভাব হতে পারে।
ট্যানিন
চা, কফিতে থাকা ট্যানিন আয়রন শোষণ কমাতে পারে। কিছু ক্যান্সার, যেমন—খাদ্যনালির ক্যান্সার সুপারি, বাদাম এবং ভেষজ চায়ের মতো ট্যানিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানা গেছে। উচ্চমাত্রার ট্যানিন কার্সিনোজেনিক হতে পারে।